২০ মাদক ব্যবসায়ীকে পূণর্বাসন করে সম্মাননা পেলেন সোনাগাজীর ইউপি চেয়ারম্যান বাদল
জাবেদ হোসাইন মামুন, সোনাগাজী (ফেনী) ।।
২০ মাদক ব্যবসায়ীকে পূণর্বাসনের স্বীকৃতি স্বরূপ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিশেষ সাহসিকতার সম্মাননা পেলেন ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বাদল।
এ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ রোববার (৩০ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের উদ্যোগে নগরীর হোটেল সৈকতে আলোচনা সভা ও সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার আনোয়ার পাশা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিজিবির উপ-মহাপরিচালক চট্টগ্রাম (দক্ষিণ) কর্নেল এস এম আবুল এহসান, সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ফয়সাল মাহমুদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্ল্যাহ কাজল, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী প্রমুখ।
মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবসে মাদক বিক্রি ও সেবন বন্ধে অবদান রাখায় চেয়ারম্যান বাদলকে সম্মাননা দেয়া হয়।
জানা গেছে, মঙ্গলকান্দি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের প্রচেষ্টায় মাদকের কারবার ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন অন্তত ২০ জন। তারা এখন কৃষি, ব্যবসা ও দিনমজুরিসহ নানা কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত থেকে জীবিকানির্বাহ করছেন। তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর পথে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন চেয়ারম্যান বাদল। ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর সোনাগাজী উপজেলা প্রশাসন ও ফেনী জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফের উপস্থিতিতে মাদক থেকে ফিরে আসা ওই ২০ জনকে শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়।
চেয়ারম্যান বাদল জানান, প্রথমবার চেয়ারম্যান থাকাকালে মাদক কারবারিদের মাদক কেনাবেচা ও সেবন থেকে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করেও পুরোপুরি সফল হননি তিনি। তারপর দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত হওয়ার পর তার ইউনিয়নের মাদক কারবারিদের সঙ্গে কথা বলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অনুরোধ করেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় হাতেনাতে ধরে মাদক কারবারিদের পুলিশের হাতে তুলে দেন।
তিনি আরও জানান, এরপর গ্রেফতার হওয়া মাদক কারবারিরা জামিনে বের হলে তাদের খোঁজখবর রাখতেন। এলাকাবাসী ও ইউপি সদস্যদের নিয়ে তাদের বাড়িতে যেতেন। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারি সহযোগিতা ও কর্মসংস্থানের আশ্বাস দিতেন।
কখনো ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াতেন। এভাবে একে একে ২০ মাদক কারবারিকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ফেনীর উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ বলেন, ২০ মাদক কারবারিকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের তদন্তে সত্যতা মেলায় চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বাদলকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনা দেশের অন্য জনপ্রতিনিধির জন্য অনুকরণীয় হবে বলে আমি মনে করি। এতে মাদক নিয়ে সরকারের জিরো টলারেন্সের যে নীতি সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।