ঘাড়াঘাটে বাজার মাতাচ্ছে ডন, বাদশা ও টাইগার নামের গরু সাথে খাসি ফ্রি দেওয়ার ঘোষণা
হিলি প্রতিনিধি
আর মাত্র কয়েকদিন পরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুসলমান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন পশুর হাটে উঠতে শুরু করেছে কুরবানীর গরু ছাগল। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বাজার মাতাচ্ছে মনিরুল ইসলাম নামের খামারে লালন পালন করা ডন-বাদশা-টাইগার নামের ৩টি বড় আকারের গরু। ইতোমধ্যেই গরু তিনটি বিক্রয়ের জন্য প্রত্যেকটির সাথে একটি করে বড় আকারের খাসি উপহার হিসেবে ঘোষনা দিয়েছেন খামাড়ি। এদিকে প্রতিদিন বেশ সংখ্যক মানুষ এই বড় আকারের গরু দেখতে ভিড় করছেন তার বাড়িতে।
ঘোড়াঘাট পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কাজিপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে বসত বাড়ির পাশে বড় আকারের ৩টি গরুসহ সর্বমোট ১৪টি গরু কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করেছেন। ফ্রিজিয়ান শাহিওয়াল জাতের ৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬ ফুট উচ্চতার ডন, বাদশা,টাইগার নামে ৩টি বড় গরু রয়েছে তার খামাড়ে। ডন নামের গরুটির দাম হাকিয়েছেন ৭ লক্ষ টাকা, বাদশা নামের গরুটির দাম হাকিয়েছেন ৬ লক্ষ টাকা, টাইগার নামের গরুটির দাম হাকিয়েছেন ৫ লক্ষ টাকা।
গরু দেখতে আসা আমিনুল ইসলাম বলেন, উপজেলার কাজিপাড়া গ্রামে মনিরুল ইসলামের এক ব্যাক্তি বড় আকারের ৩টি গরু লালন পালন করছেন শুনে তার খামাড়ে সেই গরু দেখতে এসেছি। তো খামাড়ে এসে দেখলাম আসলেই বড় আকারের গরু এমন আকারের গরু আগে শুধু টিভিতে বা পত্রিকায় দেখেছি কিন্তু আমাদের ঘোড়াঘাটে কেন অত্র অঞ্চলে আর কেউ লালন পালন করেনি। আমার মতো অনেকেই আসছে তার বড় আকারের এসব গরু দেখতে।
গরু ৩টির মালিক মনিরুল ইসলাম জানান, আমি স্থানীয় হাট থেকে ফিজিয়ান শাহিওয়াল জাতের এই ৩টি বাছুর কিনেছিলাম। প্রায় আড়াইবছর ধরে নিজ বাড়িতে লালন পালন করে এসব গরু কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করেছি। শান্ত প্রকৃতির হলেও চাল চলন ও দেখতে ডনের মতো হওয়ায় একটি গরুর নাম রেখেছি ডন, তেমনি অপরটির নাম রেখেছি বাদশা-আর বাকিটার নাম রেখেছি টাইগার। সম্পুর্ন দেশীয় খাবার খাইয়ে এসব গরু লালন পালন করা হচ্ছে। প্রতিটি গরুর দৈনিক সাড়ে চার কেজি করে গমের ভূসি, তিন কেজি ধানের গুড়া, দুই কেজি কালাইয়ের ভূসি, তিন কেজি করে খুদ ও ছয় আটি করে খড় খাওয়ানো লাগে। এতে করে প্রতি মাসে একেকটি গরু প্রতি তার লালন পালন খরচ পড়েছে প্রায় ১৮-২০ হাজার টাকার মতো।
তার দাবি ডন নামের গরুটির আনুমানিক ওজন ২৫ মণ,বাদশানামের গরুটির ওজন ২৩ মন,আর টাইগার নামের গরুটির ওজন ২০ মণ হবে। প্রতিদিন এসব গরু দেখতে আমার বাড়িতে ভিড় করছেন অনেক ক্রেতারা। গোখাদ্যসহ সবকিছুর দামই বেশি যার কারনে এবারে গরু লালন পালনে আমাদের বেশ খরচ হয়েছে, এজন্য এবারে গরুর দাম বেশি। বড় আকারের গরু হওয়ায় ও বাজারে নিয়ে যাওয়া খানিকটা ঝামেলা এবং বাড়তি খরচের কারনে আমি এই ৩টি বড় গরু বাজারে তুলতে পারছি না। আমি চাইছি যেন বাড়ি থেকেই এসব গরু বিক্রি করে দিতে পারি এতে করে আমার যেমন ঝামেলা কম হবে তেমনি ক্রেতাদের হাটে যাওয়াসহ অন্যান্য বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হবেনা। যার কারনে ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য বড় ৩ টি গরুর সঙ্গে ৩টি বড় আকারের ছাগল উপহার দিতে চেয়েছি। বাড়িতে লালন পালন করা প্রতিটি ছাগলের ওজন ২৮ থেকে ৩০ কেজির মতো। তবে কোন ক্রেতা যদি কেজি হিসেব করে বা এমন দামে নিতে চাই তাহলে আলোচনা সাপেক্ষে দরদাম করে ক্রয় করা যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এপর্যন্ত অনেকেই আসছেন গরু দেখতে তবে সকলেই ৩লাখ থেকে সাড়ে ৩লাখ টাকা দাম বলছেন তাতে করে আমার খরচ উঠা তো দুরে থাকলো উল্টো আমাদের লোকশান গুনতে হবে। যেহেতু কোরবানীর ঈদের কয়েকদিন এখনো বাকি আছে যদি এর মধ্যে বিক্রি না হয় তাহলে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করছি।
ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিপ্লব কুমার দে বলেন, উপজেলার মনিরুল ইসলাম নামের এক খামাড়ি ছোট আকারের গরুর সাথে বড় আকারের ৩টি গরু লালন পালন করেছেন। আমাদের পরামর্শ মোতাবেক যা সম্পুর্ন প্রাকৃতিক খাবার কাচা ঘাস খড় খাইয়ে এসব গরু লালন পালন করছেন। ইতোমধ্যেই এসব গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন তবে যেহেতু বড় আকারের গরুর স্থানীয় বাজারে তেমন ক্রেতা নেই এর ক্রেতা সাধারনত রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় স্থানে তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি পোস্ট কুরবানীর হাট নামক গ্রæপে ছবি দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি এসব গরু তিনি ভালো দামেই বিক্রি করতে পারবেন এবং তিনি লাভবান হবেন।