২১ জুলাই পঞ্চগড়কে দেশের প্রথম ভূমিহীন জেলা ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী
পঞ্চগড় প্রতিনিধি।।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক (ডিসি) জহুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আগামী বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দেশের প্রথম শতভাগ ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে পঞ্চগড়কে বিভিন্ন ভাবে সাজিয়ে তুলছেন জেলা প্রশাসন। ওই দিন সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা সদরের মাহানপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগিদের সাথে কথা বলবেন এবং পঞ্চগড় জেলাকে দেশের প্রথম ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করবেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ন প্রকল্পের ৩য় পর্যায়ের ২য় ধাপের এক হাজার ৪১৩টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের কাছে জমিসহ একক গৃহ হস্তান্তর করবেন।
এজন্য মাহানপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার বিশেষভাবে সাজানো হচ্ছে। এদিকে ভিডিও কনফারেন্সের পঞ্চগড় প্রান্তের অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন এমপি প্রধান অতিথি থাকবেন।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) দুপুরে মাহানপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পে সাংবাদিকদের নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ডিসি জহুরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) জহুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, পঞ্চগড় জেলায় তিন ধাপে মোট চার হাজার ৮৫০ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার চিহ্নিত করে প্রতিটি পরিবারের জন্য একক গৃহ নির্মাণ করা হয়। এসব একক গৃহে আশ্রয় পাবেন ১৫ হাজার ১৫৯ আশ্রয়হীন মানুষ। এদের মধ্যে স্কুলগামী শিশুর সংখ্যা প্রায় দুই হাজার ৫০০ জন। প্রতিটি আশ্রয়ণের ১ থেকে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে স্কুল, হাট-বাজার, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন আয়বর্ধক কাজের সুবিধা। আশ্রয়নের একক গৃহের প্রতি পরিবারের জন্য দুই শতক করে জমিসহ রয়েছে দুইটি করে শোয়ার ঘর, রান্নাঘর, বিদ্যুৎ সুবিধা, সেনেটারি লেট্রিন, একটি প্রশস্থ বারান্দা ও সুপেয় পানির জন্য বসানো হয়েছে গভীর নলকূপ। জেলায় শতভাগ আশ্রয়ণের জন্য প্রায় ৭৪ একর খাস জমি উদ্ধার করা হয় যার বাজার মুল্য প্রায় ১৩৪ কোটি টাকা বলে জানান জেলা প্রশাসক।
সংবাদ সম্মেলনের আরও বলা হয়, তিনটি পৌরসভা বাদে জেলার পাঁচ উপজেলার মোট ৪৩ ইউনিয়নকেই আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় আনা হয়। দেশের প্রথম ভুমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত জেলা ঘোষনা বাস্তবায়নে দফায় দফায় বৈঠকসহ গ্রাম থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে মাইকিং করে, পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার করে ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের কাছে আবেদন চাওয়া হয়। এই আবেদন প্রতি ওয়ার্ড থেকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের কাছে জমা হয়। ৪৩ টি ইউনিয়ন পরিষদে জমা হওয়া আবেদন বিশেষ ট্রাস্কফোর্স ও মনিটরিং কমিটির মাধ্যমে যাচাই বাছাইসহ দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর জেলায় চার হাজার ৮৫০ টি ভুমিহীন চিহিৃত করা হয়। তবে জেলার তিন পৌরসভা এলাকার ভূমিহীন ও গৃহহীনদেরও পরবর্তীতে বিশেষ প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দীপংকর রায়, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুদুল হক, সহকারি কমিশনার (ভূমি) নারায়ন চন্দ্র রায়, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান কাজী আল তারিকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকর্মীসহ আশ্রয়নের সুবিধাভোগীরা।