১৮ই অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল এর জন্মদিন

সুমন চিশতী।।
আজ শেখ রাসেল দিবস, ৬০তম জন্মদিনে শেখ মুজিবুর রহমানের সর্বকনিষ্ট পুত্র শেখ রাসেল (১৮ অক্টোবর ১৯৬৪ – ১৫ আগস্ট ১৯৭৫) বাংলাদেশের ইতিহাসের মহানায়ক ও অবিসংবাদিত নেতা। ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন শেখ রাসেল।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিবারের অন্য সদস্যদের মতো শিশু রাসেলও রক্ষা পাননি ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঘাতকরা নির্মমভাবে তাকেও হত্যা করেছিল।

বঙ্গবন্ধু তাঁর প্রিয় লেখক খ্যাতিমান দার্শনিক ও নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্ব বার্ট্রান্ড রাসেলের নামানুসারে পরিবারের এই নতুন সদস্যের নাম রাখেন ‘রাসেল’। এই নামকরণে মা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। শৈশব থেকেই দুরন্ত প্রাণবন্ত রাসেল ছিলেন পরিবারের সবার অতি আদরের। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে রাসেল সর্বকনিষ্ঠ। ভাই-বোনের মধ্যে অন্যরা হলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর অন্যতম সংগঠক শেখ কামাল, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা শেখ জামাল এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ শেখ রেহানা। শেখ রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রত্যূষে বিপথগামী একদল তরুণ সেনা কর্মকর্তা ট্যাঙ্ক দিয়ে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমণ্ডিস্থ ৩২ নম্বর বাসভবন ঘিরে ফেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তার পরিবার এবং তার ব্যক্তিগত কর্মচারীদের সাথে শেখ রাসেলকেও হত্যা করা হয়।শেখ মুজিবের নির্দেশে রাসেলকে নিয়ে পালানোর সময় ব্যক্তিগত কর্মচারীসহ রাসেলকে অভ্যুত্থানকারীরা আটক করে। আতঙ্কিত হয়ে শিশু রাসেল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেছিলেন, “আমি মায়ের কাছে যাব”। পরবর্তীতে মায়ের লাশ দেখার পর অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে মিনতি করেছিলেন “আমাকে হাসু আপার (শেখ হাসিনা) কাছে পাঠিয়ে দাও”।

বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত কর্মচারী এএফএম মহিতুল ইসলামের ভাষ্যমতে, “রাসেল দৌড়ে এসে আমাকে জাপটে ধরে। আমাকে বললো, ভাইয়া আমাকে মারবে না তো? ওর সে কণ্ঠ শুনে আমার চোখ ফেটে পানি এসেছিল। এক ঘাতক এসে আমাকে রাইফেলের বাট দিয়ে ভীষণ মারলো। আমাকে মারতে দেখে রাসেল আমাকে ছেড়ে দিল। ও (শেখ রাসেল) কান্নাকাটি করছিল যে ‘আমি মায়ের কাছে যাব, আমি মায়ের কাছে যাব’। এক ঘাতক এসে ওকে বললো, ‘চল তোর মায়ের কাছে দিয়ে আসি’। বিশ্বাস করতে পারিনি যে ঘাতকরা এতো নির্মমভাবে ছোট্ট সে শিশুটাকেও হত্যা করবে। রাসেলকে ভিতরে নিয়ে গেল এবং তারপর ব্রাশ ফায়ার করে তার বুকটা ঝাঝড়া করে দিলো।

প্রতিবছর দিবসটি ঘিরে বাংলাদেশ আওয়ামী ও সহযোগী সংগঠনগুলো ব্যাপক কর্মসূচি পালন এবছরও বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদরের ছোট ভাই শেখ রাসেল এর স্মৃতির স্বরণে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সহ আওয়ামীলীগের বিভিন্ন স্তরের সংগঠনের উদ্যোগে সারাদেশে মিলাদ মাহফিল আলোচনা সভা ও কেককেটে দিবসটি পালন করবেন বলে জানা গেছে।

এফআর/অননিউজ

আরো দেখুনঃ