নড়াইলে পুলিশ কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে আদিবাসিদেও মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

নড়াইল প্রতিনিধি।।

নড়াই সদর উপজেলার চন্ডিবরপুর ইউনিয়নে আ’লীগ নেতা ইলিয়াছ শেখ হত্যা মামলায় চন্ডিবরপুর পশ্চিম পাড়ার আদিবাসি শ্রমিক রিপন বিশ্বাসের (২০) নাম না থাকলেও পুলিশ তাকে আটক করে হত্যা মামলায় আদালতে চালান করেছে। ভুক্তভোগি পরিবার ও স্থানীয় দিবাসীদের অভিযোগ পুলিশ নির্দোষ রিপনকে আটকের পর অত্যাচার করে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকারোক্তি নেওয়ার চেষ্টা করছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং ইলিয়াছ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল হকের বিচারের দাবিতে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নড়াইল জজ আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে আদিবাসি স¤প্রদায়ের মানুষ।

প্রায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন নড়াইল আদিবাসী কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি অশোক কমর্কার, আদিবাসী রমেশ বিশ্বাস, মিন্টু বিশ্বাস,শিখা রানী প্রমুখ। বক্তারা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার অমানবিক কর্মকান্ডের বিচার দাবি ও রিপন বিশ্বাসকে মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতির দাবি জানান।

রিপন বিশ্বাসের মা সবিতা বিশ্বাস বলেন, আমার ছেলে দিন মজুরের কাজ করে। তার আয়ের ওপর আমার ৫ জনের সংসার চলে। ২মাস আগে গ্রামের কোথায় হত্যা হয়েছে তাও আমরা জানিনা। রোববার (২২ সেপ্টম্বর) গভীর রাতে পুলিশ আমার ছেলেকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে এসে অত্যাচার-নিযার্তন করে খেয়ে মরে যাব।
নড়াইল আদিবাসী কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি অশোক কমর্কার বলেন, চন্ডিবরপুর গ্রামে আদিবাসীদের মন্দিরের ২৮ শতাংশ জমি নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের
সাথে হাইকোর্টে একটি মামলা রয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা মন্দিরের জায়গায় জোরপূর্বক কলা গাছ লাগিয়েছে। এখন প্রভাবশালীরা মন্দিরের জায়গা নিয়ে মামলার বাদি
পক্ষকে বিভিন্নভাবে হুমকিও দিচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ করায় রিপনের নামে মিথ্যা দিয়ে আমাদের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী রাজিব আহম্মেদ রাজু দাবি করেন, চন্ডিবরপুর গ্রামে বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে দলাদলি রয়েছে। পুলিশ একটি নিরীহ দিনমজুর ছেলেকে ধরে এনে অত্যাচার করে জোরপূবর্ক স্বীকারোক্তি নিয়ে মামলার আসামি করেছেন। জানা গেছে, এ বছরের ২২ জুলাই রাতে চন্ডিবরপুর ইউনিয়ন ৫ নম্বর ওয়ার্ড আ’লীগ
সভাপতি চন্ডিবরপুর পূর্ব পাড়ার ইলিয়াছ শেখকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। চন্ডিবরপুর ইউপিতে উপ-নির্বাচন ও গ্রাম্য দলাদলিকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রæতার জের ধরে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় বলে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের মুখে শোনা যায়। এ ঘটনায় নিহতর স্ত্রী শিউলি বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এসআই আব্দুল হক বলেন, রিপন ইলিয়াছ জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। এ ছাড়া এ মামলায় গ্রেফতার অন্যান্য কয়েক আসামি তার সম্পৃক্ততার কথা বলেছে। ফলে তাকে এ হত্যা মামলায় আদালতে চালান দেয়া হয়েছে।

আরো দেখুনঃ