সড়ক দুর্ঘটায় জীবনে অন্ধকার নেমে আসে কুড়িগ্রামের বাস শ্রমিক আবুল হোসেনের দৃষ্টিশক্তি ফেরত পেতে চায় সবার সহায়তা

শাহীন আহমেদ, কুড়িগ্রাম।

একটি সড়ক দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না যেন সত্যি হলো হতদরিদ্র মটর শ্রমিক আবুল হোসেনের জীবনে। ‘মা-মনিকা নৈশ কোচের হেলপার হিসাবে কাজ করতো সে। স্ত্রী তিন মেয়ে আলভি, আনিশা ও আনহাকে নিয়ে ছিলো সুখের সংসার। অর্থনৈতিক টানাপোড়ন থাকলেও ছিলো গতিময় জীবন। সে কুড়িগ্রাম জেলা শহরের হিঙ্গনরায় এলাকার মৃত আবুল কাদেরের পুত্র। ৫ বছর আগে সেপ্টেম্বর মাসের একটি সড়ক দুর্ঘটনা কাল হয় আবুলের । জীবনের গতিপথ বদলে যায়। সুখের গতিপথ থেমে যায়। শুরু হয় দু:খ-কষ্ট, বঞ্চনা, অনাহার-অর্ধাহার আর অর্থের অভাবে চিকিৎসা বঞ্চিত জীবনের। ভাগ্যের চাকা উল্টো পথে হাটছে তার।
সেদিনের কথা বলতে গিয়ে হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন আবুল। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ‘মা-মনিকা নৈশ্য কোচে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম ফিরছিলো। শেরপুর ফুডভিলেজ এর কাছে ট্রাকের সাথে বাসের মুখোমুখি সংর্ঘষ হয়। মারা যায় ৬জন। আহত হয় অনেকে। এর মধ্যে এই গাড়ির হেলপার আবুল সামনে থাকায় গ্লাস ভেঙ্গে চোখ সহ শরীরের ভিন্নি স্থানে ক্ষত হয়। স্থানায়ী ডাক্তারের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়। অবহেলার কারণে উন্নত চিকিৎসা নেয়া হয় না। চোখ খচখচ করা, পানি পড়া থেকে নানা উপসর্গ দেখা নিতে থাকে। এরপর কুড়িগ্রামে চোখের ডাক্তার রিপন সরকারকে দেখায়। কিন্তু কিছুটা সুস্থ হলেও ভিতরে ভিতরে চোখের ক্ষতি হচ্ছিল তা ডাক্তারও বুঝতে পারেনি। এক বছর পর চোখে কম দেখতে পায় সে। চোখের জ্যোতি কমে যায়। ঝাপসা ঝাপসা ভাব চলে আসে। ২০২১ সালের শেষ দিকে ডাক্তার করনিয়া লাগাতে বলে। ঢাকায় ইসলামিয়া হাসপাতালে আমেরিকা থেকে আসা এক চিকিৎসকের কাছে প্রায় দেড় লাখ টাকার খরচ করে বাম চোখে করনিয়া লাগায়। ৬মাস যেতে না যেতে আবার করনিয়ায় সমস্যা দেখা দেয়। ২২ সালের প্রথম দিকে ডান চোখেও করনিয়ার সমস্যা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে দু চোখই পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যায়। বারবার চেকআপ আর চিকিৎসা কোন কাজে আসিনি। পরে ইসলামিয়া হাসপাতাল থেকে ডাঃ রেহানা আক্তার ও ডাঃ রাশেদ আলম জরুরী ভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। দুচোখের দৃষ্টি ফেরাতে এবং করনিয়া লাগাতে প্রায় ১০ লাখ টাকার খরচের হিসাব জানায় চিকিৎসক।

এতো টাকা কোথায় পাবে আবুল। পাহাড় সমান বোঝা তার। একদিকে পরিবারের ভরণপোষণ অন্য দিকে চিকিৎসার খরচের যোগান দিতে দিতে এখন সে নিঃস্ব। দোকান ঘর, বাড়ি, জায়গা জমি সব বিক্রি করে দিয়েছে অনেক আগেই। এখন শহরের নিমবাগান এলাকায় অন্যের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অন্ধ তাই কর্ম নেই। স্ত্রী লতিফা প্রতিবেশীদের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে। ধার-দেনা আর মানুষের সাহায্যের উপর চলছে কোন রকমে জীবন। মাসে লাগে প্রায় ২হাজার টাকার ঔষধ। টাকা নেই তাই সে চিকিৎসাও প্রায় বন্ধ।
সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে ক্লান্ত, সহায়তা নেই। তাই এখন ভরসা হৃদয়বান ব্যক্তিরা যদি সাহয্যের হাত বাড়িয়ে দেয় । তা হলে আবুল হোসেন ফিরে পেতে পারে দুচোখের আলো। তবেই ফিরবে সংসারে ভাগ্যের চাকার গতি। আবুল হোসেনকে সহায়তার বিকাশ নম্বর-০১৭৭৩১৭৪৯১৭, ফোনে যোগায়োগ

আরো দেখুনঃ