সাতকানিয়ার ১৭টি ইউপি নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতা হওয়ার সম্ভাবনা
শান্তনু হাসান খান।।
সারাদেশে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউপি নির্বাচন করতে যাচ্ছে সিইসি স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে। এর মাঝে ৬টি ধাপে সারাদেশে ৫ হাজার ৮৮৪টি ইউপি নির্বাচন সমাপ্ত করেছেন। ব্যাপক সহিংসতা, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ আর খুনÑখারাপির মধ্যদিয়ে নির্বাচন শেষ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। গত ৩১ জানুযারি ৬ষ্ঠ ধাপে ২১৯টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামীলীগের নৌকার প্রার্থী খুব একটা যুতসই করতে পারেনি। বরং আওয়ামীলীগের কর্মীরাই স্বতন্ত্র হিসেবে বেশ সাড়া জাগিয়েছেন।
আগামী ৭ ফেব্র“য়ারি দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ১৭টি ইউপি নির্বাচন করতে যাচ্ছেন মাঠ প্রশাসন। এর মাঝে জনসংযোগ চলাকালীন সময়ে বেশ কয়েকটি ইউপিতে হামলা, পাল্টা হামলা আর হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। গত মঙ্গলবার সাতকানিয়ার ধর্মপুর ইউনিয়নে নির্বাচনী সহিংসতায় একজন নিহত হন। আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে। এর আগে খাগরিয়া অনুরূপ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এতেও ১০জন হতাহত হন। স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ধর্মপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড কুন্ডুকুল এলাকায় নৌকার প্রার্থী আর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতায় আনোয়ার (৫৭) মারা যান। আনোয়ার কালু মিয়ার সন্তান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ইলিয়াছ চৌধুরীর একজন সমর্থক।
আর আহতরা হলেন-৫নং ওয়ার্ডের আলী আহাম্মদের ছেলে গিয়াস উদ্দিন, চাঁদের পাড়া এলাকার মোঃ ইউনুছের স্ত্রী ফারজানা ইয়াসমিন ঝর্না, লিয়াকত মিয়ার ছেলে মোঃ হারুন আর জসিম উদ্দিনের স্ত্রী জান্নাতআরা। পুলিশ বলেন-ঐদিন বেলা ৩টার দিকে চাঁদের পাড়া এলাকায় নৌকা প্রার্থী নাছির উদ্দিন টিপু আর বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী ইলিয়াছ চৌধুরীর সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি পরে হামলা মামলা শুরু হয়। পুকুরের পূর্ব পাড়ে দুপক্ষেরই রামদা, লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
এর আগে নিরাপত্তা চেয়ে ইলিয়াছ চৌধুরী একটি সাধারণ ডাইরী করেন তার নিরাপত্তা চেয়ে। ফলে পুলিশ এক দারোগা সহ ৪ সিপাহী নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এদিকে ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমাদের জনসংযোগকে বানচাল করতে জসিম ও কুতুবের বাড়ীর ছাদ থেকে আমাদের কর্মীদেরকে টার্গেট করে এ হামলা চালানো হয়। একসময় আনোয়ার আমাকে রক্ষা করতে গিয়ে ইটের আঘাতে আহত হলে তাকে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগের তীরটা বরাবর নৌকার প্রার্থী নেছার আহমেদ টিপুর দিকে। এ বিষয়ে টিপুকে বার বার ফোন করা হলে তিনি কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রামের পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, যেহেতু নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে এসব হত্যাকান্ড কোন সুরাহা করার এখতিয়ার থাকে না, সেহেতু লিখিত অভিযোগ আসলে আমরা নিয়মিত মামলা করার জন্য ওসিকে নির্দেশ দেয়া যেতে পারে। তবে স্পেসিক গ্রাউন্ড দেখাতে হবে। অপরদিকে স্থানীয় আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য ইলিয়াছ চৌধুরী আগামীতে উঠে আসা দরকার। এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রায় ১০ হাজার ভোটাদের মাঝে সকল ভোটাররা যদি সুষ্ঠু পরিবেশের মধ্যদিয়ে নিজ নিজ ভোট প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ ভোট ইলিয়াছ চৌধুরীর কোটে যাওয়ার সম্ভাবনা। কেননা নৌকার প্রার্থী টিপু এলাকায় নতুন আওয়ামী নেতা। তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও এলাকার মানুষদের কাছে বেশ প্রশ্নবিদ্ধ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ইলিয়াছ চৌধুরীর বলেন আমাদের সাতকানিয়ায় ইতিমধ্যেই অনেক ব্রিজ-কালভার্ট, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, রাস্তাঘাট, শতভাগ বিদ্যুতায়ন ও এলাকার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে ঢেলে সাজাবার চেষ্টা করেছেন এলাকার মাননীয় এমপি সাহেব। আর সবকিছুই হয়েছে আমার এমপি’র দিক নির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতায় মধ্যেই। যদি আমি নির্বাচিত হতে পারি এ ধারাবাকিতা রক্ষা করার চেষ্টা করবো আগামী দিনগুলোতে। আমি কোনো প্রফেশনাল চেয়ারম্যান হয়ে-টিআর-কাবিখা’র পেছনে দৌড়াতে চাই না। জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।