কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন-২০২২,২৭ নং ওয়ার্ডে সম্ভ্যাব্য প্রার্থী আছেন ৪ জন
শান্তনু হাসান খান।।
সমতটের বেলাভূমি-ইতিহাস আর ঐতিহ্যকে লালন করছে কুমিল্লা। সে ব্রিটিশ আমলের ১৮৯৪ থেকে তৎকালীন পূর্ববঙ্গের মাঝে যে কটা পৌর এলাকায় মাঝারি শহরের অবকাঠামো ছিল তার মধ্যে চুয়াডাঙ্গার কোটচাঁদপুর পৌরসভা, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা আর তৎকালীন ত্রিপুরার কুমিল্লা পৌরসভা।
কুমিল্লার পৌর এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ে এখানকার নাগরিকদের সুবিধার জন্য কুমিল্লা পৌরসভাকে বর্ধিত করে সদর দক্ষিণ এলাকার ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে আরো একটি পৌরসভা গঠন করা হয়। পরবর্তী সময় ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে বর্তমান সিটি কর্পোরেশন চালু রয়েছে। এখানে ২৭টি ওয়ার্ডে ২৭ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের মোট ৯ জনকে নিয়ে ৩৬জন কাউন্সিলর বিদ্যমান। দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জনগণ সুবিধা ভোগ করছেন। আগামী মার্চের যে কোন সময় নতুন তফসিল ঘোষণা হলে সম্ভাব্য প্রার্থীরা একটু নড়েচরে বসবেন। কাউন্সিলরদের সীমাবদ্ধতা আর বাজেটের কারণে অনেক উন্নয়ন সফলতার মুখ দেখেননি। তারপরেও বিশাল কর্মযজ্ঞের মধ্যদিয়ে ২৭নং ওয়ার্ডে যথেষ্ট উন্নয়ন সাধন করা হয়েছে। ২৭নং এর বর্তমান কাউন্সিলর চলতি দায়িত্বে আছেন আবুল হাসান। তিনি আগামীতে আবারো কাউন্সিলর পদের প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকছেন। তার পাশাপাশি আরও ২/৩ জন দল থেকে নমিনেটেড হতে চাইবেন। তাদের মাঝে রয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও চৌয়ারা যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা আবুল কালাম। এছাড়াও আছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের মোশারফ হোসেন এবং পাঠানকোটের মরহুম হারিজ মেম্বারের ছেলে-ওসমান গণি (শাহআলম)। এছাড়াও ছাত্রলীগের একজন নেতার নাম শোনা যায় আবুল হাসান দুলাল। দু’জন মাত্র মাঠে থাকবেন বাকিরা মৌসুমী প্রার্থী হয়ে আসবেন বলে অনেকে মনে করেন। তফসিল ঘোষণা হলে হাত গুটিয়ে বসে যাবার সম্ভাবনাও প্রচুর।
এদিকে বর্তমান কাউন্সিলর এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করাতে জনপ্রিয়তা কমে যায়নি চৌয়ারার জনগণ মনে করছেন। এ প্রসঙ্গে কাউন্সিলর আবুল হাসান বলেন, বিগত দিনে জনগণের ম্যান্ডেড নিয়ে আমি নিরলসভাবে এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করে আসছি। আমার ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা নেই বললেই চলে। ড্রেনেজ সিস্টেম যথেষ্ট উন্নত করা হয়েছে। বিদ্যুৎ ও সেনিটেশন যথেষ্ট উন্নত হয়েছে। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে জনগণ যদি পুনরায় ম্যান্ডেড দেন- তাহলে ইনশাল্লাহ আগামীতেও থাকতে চাইবো। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক এটা প্রত্যাশা করি মনে প্রাণে।
তিনি বলেন, এলাকায় মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত ওয়ার্ড নির্মাণে আমি জনগণের সহযোগিতা চাইবো আগামীতে। আমি নির্বাচিত হলে হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে রাজস্ব কর্মকর্তার সাথে আগামীতে বৈঠকে বসবো। কেননা বাণিজ্যিক এলাকার হোল্ডিং ট্যাক্স আর আবাসিক এলাকার হোল্ডিং ট্যাংক্সের যথেষ্ট বৈসম্য রয়েছে। এটা দূর করার চেষ্টা করবো। এছাড়াও আমার এলাকায় যত্রতত্র পড়ে থাকা ময়লার স্তুপ অপসারণের জন্য ভালো ডাম্পিং এর ব্যবস্থা করবো। এদিকে সরেজমিনে দেখা যায় প্রভাবশালী দু’জনই কাউন্সিলর প্রার্থী। চলতি দায়িত্বে হাসান আর আগামীতে আবুল কালাম, এ দুজন এলাকাতে আলোচনায় আছেন এলাকার ৮ হাজার ভোটারদের মাঝে। এ প্রসঙ্গে কালাম বলেন, আমার অতীতের পলিটিক্যাল ক্যারিয়ার আর জনগণের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি বিবেচনা করলে সিলেকশন কমিটি ইনশালাহ আমাকে দল থেকে নমিনেটেড করবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
আর সেই বিশ্বাসের উপর ভর করে আমি নির্বাচনের মাঠকে সুন্দর করে গুছিয়ে রেখেছি। তিনি আরো বলেন, যেহেতু এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন-জনগণ চাইছেন স্থানীয়ভাবে কারা জনগণের কাজ করবেন তাদেরকে প্রাধান্য দিবেন। মেয়র নিয়ে কোন ফ্যাক্টর কাজ করে না এলাকাতে। আমি নির্বাচিত হলে ইনশালাহ ২৭নং ওয়ার্ডকে অত্যাধুনিক ডিজিটালাইজড ওয়ার্ড হিসেবে জনগণকে উপহার দেয়ার চেষ্টা করবো। জনগণের নাগরিক সুবিধা প্রদানের যত প্রকার কনসেপ্ট আছে তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো আগামী দিনগুলোতে।
চলতি কাউন্সিলর আবুল হাসান এর জনপ্রিয়তা গতবারের চেয়ে এবার মোটেও কমে যায়নি বলে চৌয়ারার কয়েকজন এ প্রতিবেদককে জানান। তিনি বলেন জনগণ ম্যান্ডেড দিলে আমি আগামীবারও উঠে আসবো। উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়ন করে নাগরিক সুবিধা প্রদানে অঙ্গীকার বদ্ধ। হাসান বলেন-কুমিল্লার সামগ্রিক উন্নয়নে মেয়রের পাশাপাশি এখানকার নীতিনির্ধারক মাননীয় সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহারের দিন নির্দেশনায় এবং পৃষ্ঠপোষকতার মধ্যদিয়ে আগামীতে ২৭নং ওয়ার্ডকে বাসযোগ্য পরিবেশ অনুক‚লে রাখার চেষ্টার মধ্য দিয়ে একে ঢেলে সাজাবো। অত্যাধুনিক ওয়ার্ড নির্মাণ করার পাশাপাশি জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের রোল মডেলে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবো। এলাকার জনগণও চাইছেন, আবুল হাসান এর মতো একজন সামাজিক ও ক্লিন ইমেজের মানুষ পুনরায় উঠে আসুক ২৭নং ওয়ার্ডে।
এছাড়াও আবুল কালামেরও জনপ্রিয়তা খুব একটা কমতি নয়। তফসিল ঘোষণার পরে বুঝা যাবে নির্বাচনের মাঠ কার ফেভারে আছে। কালাম বলেন, তৃণমূল থেকে ওঠে আমার যে অভিজ্ঞতা সেটা জনগণ অবগত আছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, জনগণ এবার নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী বাছাই করতে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না।