শিক্ষকের বদলি ঠেকাতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

আবু বক্কর সুজন, রাজশাহী।।

এক শিক্ষকের বদলি ঠেকাতে রাজশাহীর মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১৫মে সোমবার সকালে ইউএনও-র কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। এর আগে স্কুল হতে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে উঠতে চাইলে থানা পুলিশ তাদের বাঁধা দিলে তাঁরা স্কুলের মেইন গেটে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন প্লেকার্ড, ব্যানার নিয়ে শিক্ষকের বদলি বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সুত্রে জানা গেছে, ভৌত বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলাম সুনামের সাথে শিক্ষকতা করে আসছেন। গত ১৬ এপ্রিল ২৩ রোববার তাঁকে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। এবিষয়ে সকালে শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের বদলি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। তারা শিক্ষক নুরুলের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র মানতে নারাজ। অত্র বিদ্যালয়ে তাঁর কোন বিকল্প নাই। তিনি একজন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ভাল মানের শিক্ষক এবং তিনি অত্র বিদ্যালয়ে ছিলেন বলেই শিক্ষার্থীরা শতভাগ জিপিএ ৫ পায়। স্যার চলে যাওয়ার কারণে আগামীতে বিদ্যালয়টি শতভাগ জিপিএ-৫ সম্মান অর্জনে ব্যর্থ হবে। আমরা স্যারের বদলি বাতিলের দাবিতে মানবন্ধনে অংশ নেয়ায় প্রধান শিক্ষক সুলতানা শাহিন ও ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের সহকারী সিনিয়র শিক্ষক সাইফুল স্যারের নাম করে স্কুলের নাইট গার্ড রফিক আমাদের নানা ধরনের হুমকি দিয়ে স্কুল থেকে মেরে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে যা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আঘাত করেছে। বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে শিক্ষকের বদলির বিষয়টি দক্ষতা ও মানবিক দিক বিবেচনা করে বদলির আদেশ বাতিল করে শিক্ষকে স্ব স্কুলে বহাল রাখার জোর দাবি জানানো হয়েছে। নইলে শিক্ষার্থীরা আগামীতে শিক্ষকের বদলি বাতিলের দাবিতে কঠোর আন্দোলনে যাব।

এবিষয়ে মুঠোফোন জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান, চাকুরিতে বদলি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। অফিস আদেশে সুদূর কক্সবাজারের মহেশখালীতে যোগদান করেছি। তবে অতি ক্ষুদ্র একটি মীমাংসিত বিষয়কে তাল বানিয়ে মোহনপুর ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের সহকারী জামায়াত পন্থি শিক্ষক সাইফুল ইসলাম মিথ্যা, প্রতিবেদন (তথ্য) ডিডি অফিসে দিয়েছেন যা অমানবিক। এছাড়াও শিক্ষক সাইফুল প্রতি নিয়ত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অঞ্চল ডিডি অফিসে নাম ব্যবহার করে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকেন। কোন শিক্ষক তার (সাইফুলের) কথার বিপরীতে গেলেই তিনি ডিডি অফিসের ভয় দেখিয়ে আর্থিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করেন। আমি একজন প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসাবে তার হীন কাজে সাড়া না দেয়াতেই হয়ত আমার এত বড় ক্ষতি হয়েছে। আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে এবং আমার বিষয়ে সঠিক তদন্ত করা হোক। পরিশেষে বলতে চাই বাবার মৃত্যুর পর অসুস্থ্য মা, অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত স্ত্রী, ছোট্ট দুটি সন্তান নিয়ে এমনিতেই কষ্টে আছি। এরই মধ্যে এই বদলীটি মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন বিষয়টি মানবিক ভাবে পুনরায় দেখার যদি সুযোগ থাকে। তাহলে বৃদ্ধ মা, অসুস্থ্য স্ত্রী ও অবুঝ দুটি শিশুর দেখভাল করতে পারতাম।

ফরহাদ/অননিউজ

আরো দেখুনঃ