কুড়িগ্রামে বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ
শাহীন আহমেদ, কুড়িগ্রাম।।

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী শালজোড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিভাগীয় তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ও অভিভাবক মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, শালজোড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী দেলোয়ার হোসেন দুলাল বিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন না করে নিজ খেয়াল খুশিমতো দায়িত্ব পালন করে আসছেন। রাতে বিদ্যালয়ে অবস্থান করার নিয়ম থাকলেও তিনি বিদ্যালয়ে না থেকে বাড়ীতে অবস্থান করেন। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হওয়ায় তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের ইট বিক্রি, উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ, ব্রেঞ্চ বিক্রয়, বিদ্যালয়ে পুকুর লিজ দেয়া সহ বিদ্যালয়ের অনুদান তৎকালীন প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে আত্মসাৎ করেছেন।
আরও জানা গেছে, তৎকালীন প্রধান শিক্ষক কৃষক লীগের ইউনিয়ন সাধারন সম্পাদক নৈশ প্রহরী দেলোয়ার হোসেন দুলালের নিকট আত্মীয় হওয়ার চাকুরী নেয়ার সময় ভূয়া জন্ম সনদ ও ৮ম শ্রেণি পাশ স্কুল সার্টিফিকেট ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অর্থের বিনিময়ে চাকুরী নিয়েছেন। এ ঘটনায় নৈশ প্রহরী ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়েছিল যা পরবতর্ীতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দমন করা হয় বলে জানা যায়।
অভিযোগকারী এনামুল হক জানান, নৈশ প্রহরী দেলোয়ার হোসেনের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূনর্ীতির প্রেক্ষিতে আমরা অভিভাবক এবং এলাকাবাসী একটি অভিযোগ করি । যার ধারাবাহিকতায় বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
এলাকাবাসী ও অভিভাবক হোসেন আলী, রফিকুল ইসলাম ও তারিকুল ইসলাম জানান, নৈশ প্রহরী দুলাল বিভিন্ন নাম্বার ব্যবহার করে উপবৃত্তির অর্থ আত্মসাৎ, গাছ বিক্রয়, স্কুলের পুরাতন ভবনের ইট বাড়ীতে নিয়ে গেছে, স্কুলের প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্যবহৃত র্যামের ইট খুলে বাড়ীতে নিয়ে বাথরুম ও টিউবয়েল পাকা করেছে। ইতিপূর্বে স্কুলের তিনটি ব্রেঞ্চ ১২ শ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক জানান, বিদ্যালয়টি নদী বিচ্ছিন্ন অনুন্নত সীমান্তবতর্ী এলাকায় হওয়ায় দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকের পদশুন্য থাকার সুবাধে নৈশ প্রহরী দেলোয়ার হোসেন দুলাল রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাউকে তোয়াক্কা না করে তৎকালীন শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরন কৌশলে স্বাক্ষর নেয়া সহ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতি করেছেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন দুলাল তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন সরকার বলেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে নীলফামারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয় তদন্ত করতে এসেছেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা নীলফামারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জানান, নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে এসেছি। অভিযোগের পক্ষে বিপক্ষে তদন্ত করা হয়েছে। যথাযথ বিশ্লেষণ করে রিপোর্ট প্রদান করা হবে।
ভুরুঙ্গামারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আখতারুল ইসলাম বলেন, গত ২ আগষ্ট এ উপজেলায় যোগদান করেছি। বিষয়টি নিয়ে পূর্ব থেকে আমাকে অবগত করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তের দিন দুপুরে আমাকে ফোনে জানিয়েছেন ।