কুমিল্লায় এলজিইডি ঠিকাদারদের মতবিনিময় সভা
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
দেশব্যাপি রড, সিমেন্ট, বিটুবিন, ইট, বালু, পাথরসহ সব প্রকার নির্মাণ সামগ্রীর ৪০-৫০ ভাগ মূল্যবৃদ্ধিতে করণীয়তা ও কর্মপ্রন্থা নির্ধারণ নিয়ে মতবিনিময় করেছেন কুমিল্লায় এলজিইডির ঠিকাদাররা। গতকাল শনিবার নগরীর ঝাউতলা এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। কুমিল্লা জেলা এলজিইডি ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির ব্যানারে আয়োজিত ওই সভায় জেলার ১৭ উপজেলার দেড়শতাধিক ঠিকাদার অংশ নেন। তারা এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপির সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
সভায় বক্তারা বলেন,“ করোনা সংকটে মূল্যবৃদ্ধির পর সম্প্রতি তেলে দাম বাড়ার ফলে রড, সিমেন্ট, ইটসহ সব ধরনের নির্মাণ সামগ্রীর দাম আরেক দফা বৃদ্ধি পাওয়ায় বড় ধরনের লোকসানে পড়েছে বিশেষ করে এলজিইডির ঠিকাদাররা। নির্মাণ সামগ্রীর অস্থিতিশীল বাজারের কারণে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ কাজ সম্পন্ন করা নিয়ে অনেকটা বিপাকে রয়েছেন। ভবিষ্যত দরপত্রের প্রাক্কলনে দর নির্ধারণ নিয়েও সংকিত তারা। সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চলমান প্রকল্পের দর পুনর্নিধারণ ও সামনে দিকে দরপত্রে বাজার দরের সঙ্গে সংগতি রেখে প্রাক্কলন প্রনয়নের দাবি জানান তারা। এছাড়া আগামীতে লেস রেটে কোন কাজ করবেন না বলেও সভায় অঙ্গীকার করে ঠিকাদাররা। ”
কুমিল্লা জেলা এলজিইডি ঠিকাদার কল্যাণ সমিতি সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র ঠিকাদার মো. মেজবাহউদ্দিনের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের উপদেষ্টা ও জাতীয় পার্টির নেতা এয়ার আহম্মেদ সেলিম, স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর উন্নয়ন সমন্বয়ক মো. কামাল হোসেন, সিনিয়র ঠিকাদার ও বুড়িচং উপজেলা চেয়ারম্যান আখলাক হায়দার, সিনিয়র ঠিকাদার রোটারিয়ান আবুল হোসেন ছোটন, সিনিয়র ঠিকাদার আবুল কাশেম, সিনিয়র ঠিকাদার ও মহানগর যুবলীগের সদস্য এ কে এম রিয়াজউদ্দিন মুন্না,আবদুল করিম চেয়ারম্যান, হাজী মো. কেফায়েত উল্লাহ, সিনিয়র ঠিকাদার নাঙ্গলকোট উপজেলা ভাইস- চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা আরও বলেন ‘আজকে দুঃখের সঙ্গে আমাদের বলতে হচ্ছে দেশব্যাপী সব প্রকার জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গিয়েছে,আমরা যারা নির্মাণ কাজে নিয়োজিত আমরাও অসহায়, কারণ নির্মাণ সামগ্রীর দাম অনেক বেড়ে গিয়েছে। যে রড কিনেছি ৬০ হাজার টাকা সেটি এখন ৯৫ হাজার টাকা, যে পাথর কিনেছি ১৮০ টাকায় সেটি এখন ২৪০ টাকা ও সিমেন্টের দাম ছিল ৪০০ টাকা তা বেড়ে গিয়ে দাড়িয়েছে সাড়ে ৫ শত টাকার উপরে। ৬ হাজার টাকার বিটুমিন বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। ৯ হাজার টাকার ইট হয়েেেছ ১৩ হাজার। এরকম যদি চলতে থাকে তাহলে আমাদের পথে বসা লাগবে। অধিকাংশ ঠিকাদাররা ব্যাংক লোন নিয়ে ব্যাবসা করেছে তাদের এখন ব্যাংক রুলিং চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে তারা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
উল্লেখ্য, আড়াই বছর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং এরপর বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। সম্প্রতি তেলের দাম বাড়াতে আরেক দফা নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়েছে। সারা বিশ্বে মূল্যস্ফিতীর তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো অবস্থায় আছে। তারপরও রডসহ নির্মাণ সামগ্রীর দাম নজীরবিহীন বেড়েছে। নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। উন্নয়নে ধারা চলমান রাখতে দর পুনর্র্নিধারণ ও নতুন প্রাক্কলনে বর্তমান বাজার দরের সাথে সংগতি রেখে দাম নির্ধারণ না করা হলে হুমকীর মুখে পড়তে পারে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলি।