কুমিল্লায় কোরআন অবমাননা ও প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় ৪৩ জন গ্রেফতার
আহসানুজ্জামান সোহেল, কুমিল্লা।।
দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে- আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন। যুগের পর যুগ ধরে এই দেশে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ তাদের নিজস্ব ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করছেন। হঠাৎ করে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে দেশ বিরোধী চক্রান্ত বাস্তবায়ন করার জন্য কোন একটি নির্দিষ্ট পক্ষ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পূজামÐপে পবিত্র কোরআনকে সামনে এনে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ইতোমধ্যে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশ^াস করি যে বা যারাই যে উদ্দেশ্যে এই অপকর্ম ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দীঘির উত্তর পাড় পূজামন্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননা ও প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সংসদীয় হুইপ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, আমরা দেশবাসীকে অনুরোধ করবো এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশে সকল মানুষ স্বাধীনভাবে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করবে। সবাই যেন ধৈর্য্য ও সহনশীলতার সঙ্গে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করবে। বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। এই সময় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে দেশকে পিছিয়ে ফেলার যে ষড়যন্ত্র তারই অংশ হিসেবে কুমিল্লায় শান্তীপূর্ণভাবে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাই,বোনেরা পূজা উদযাপন করছিলো। সেখানে রাতের অন্ধকারে কোরআন শরীফকে টেনে এনে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চক্রান্ত হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আশা খান এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ডা. সেলিম মাহমুদ এমপি, কুমিল্লা সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগর আওয়মী লীগের সহ-সভাপতি আঞ্জুম সুলতানা সীমা, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেন, কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত, কুমিল্লার স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক শওকত ওসমান ও কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ শহিদ প্রমুখ।
এদিকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননা ও শহরের বিভিন্ন প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় ৪৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যে এ ভিডিও ধারণ ও ভাইরাল করেছে ফয়েজ উদ্দিন নামে ওই ব্যক্তিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। যতটা এলাকায় ঘটনা হচ্ছে প্রত্যকটি ঘটনার আলোকে মামলা হবে।
এ সময় ডিআইজি আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, এ ঘটনার পরই দেশের বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও দেখলে বুঝা যায় একটা স্পষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আর বিশেষভাবে ঘটনাস্থল থেকে যে লোক ভিডিও করে ছড়িয়ে দিয়েছে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার নাম ফয়েজ উদ্দীন। সে কোন দলের তাও যাচাই করা হচ্ছে।
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটিতে সদস্যরা হচ্ছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সায়েদুল আরেফিন, সদস্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর আহমেদ ও কুমিল্লা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া আফরিন। জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান জানান, গঠিত এই তদন্ত কমিটি বিষয়টি তদন্ত করে বৃহস্পতিবার থেকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিবেন।
এদিকে নগরীর অন্যান্য পূজামÐপগুলোতে নিরাপত্তা ও পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে মাঠে রয়েছে পুরিশ, র্যাব ও বিজিবি’র সদস্যরা।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।