ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র, একদিনে ৪০০ শহরে বিক্ষোভ

অনলাইন ডেস্ক।।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজপথ। শনিবার (১৯ এপ্রিল) দেশটির রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, নিউ ইয়র্ক সিটি, শিকাগোসহ বিভিন্ন শহরে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি, সরকারি চাকরি ছাঁটাই এবং গাজা ও ইউক্রেন ইস্যুতে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামেন।

হোয়াইট হাউসের সামনে, লাফায়েট স্কয়ারসহ বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত এসব বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা ‘ওয়ার্কারস শুড হ্যাভ দ্য পাওয়ার’, ‘নো কিনশিপ’, ‘স্টপ আর্মিং ইসরাইল’ ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন। কেউ কেউ ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ান ও ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দেন। অন্যদিকে অনেককে ইউক্রেনের পতাকা হাতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানাতেও দেখা যায়।

আন্দোলনের পেছনে ‘৫০৫০১’

এই দিনব্যাপী আন্দোলনের মূল আয়োজক ছিল তৃণমূল রাজনৈতিক সংগঠন ‘৫০৫০১’। তাদের কর্মসূচির নাম ‘ন্যাশনাল ডে অফ অ্যাকশন’। সংগঠনটি জানিয়েছে, এক দিনে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রায় ৪০০টি বিক্ষোভের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। সংগঠনটির নামের অর্থ—৫০টি অঙ্গরাজ্যে ৫০টি বিক্ষোভ, একটি সম্মিলিত আন্দোলন। এর আগেও তারা কয়েকটি বড় ধরনের বিক্ষোভের আয়োজন করেছিল, যার মধ্যে ৫ ফেব্রুয়ারি, ১৭ ফেব্রুয়ারি এবং ৪ মার্চের কর্মসূচি উল্লেখযোগ্য।

বিভিন্ন ইস্যুতে একাট্টা বিক্ষোভকারীরা

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসীবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে সরব হন। হোয়াইট হাউসের কাছে অবস্থান নেওয়া এক বিক্ষোভকারী বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের আইন ব্যবহার করে অভিবাসীদের বের করে দিতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশীদের রক্ষা করতে আমরা নেটওয়ার্ক ও প্রতিরোধ গড়ে তুলছি।”

এছাড়া যারা সরকারি চাকরি হারিয়েছেন কিংবা যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাম্প প্রশাসনের তহবিল হুমকিতে পড়েছে, তাদের পক্ষেও বিক্ষোভকারীরা সংহতি প্রকাশ করেন।

কঠোর নীতির কারণে সমালোচনার মুখে ট্রাম্প প্রশাসন

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প একের পর এক কঠোর নীতি গ্রহণ করেছেন। তিনি নতুন গঠিত সরকারি দক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই)-এর দায়িত্ব দেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ককে। এরপর থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের ২৩ লাখ কর্মচারীর মধ্যে প্রায় দুই লাখের বেশি পদ শূন্য করে দেওয়া হয়।

ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈচিত্র্য, ন্যায্যতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যক্রমে তহবিল বন্ধের হুমকি দিয়েছে। বিশেষ করে যেসব শিক্ষার্থী বা বিশ্ববিদ্যালয় ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থান নিয়েছে, তাদের ওপর চাপ বাড়ানো হচ্ছে। এই অবস্থান বিভিন্ন অধিকার সংস্থা ও সংগঠনের তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

ওয়াশিংটন মনুমেন্টের কাছে বিক্ষোভকারীদের ব্যানারে লেখা ছিল—“ঘৃণা কখনো কোনো জাতিকে মহান করেনি” এবং “সবার জন্য সমান অধিকার মানে আপনার অধিকার কমে যাওয়া নয়”।

ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি দেশজুড়ে বিক্ষোভের দ্বিতীয় দিন। বিভিন্ন শহরে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হলেও কিছু এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।
সূত্রঃ বিডি24লাইভ
মাসু/অননিউজ২৪।

আরো দেখুনঃ