তীব্র তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ট আক্রান্ত হচ্ছেন নানা রোগে
সালাহউদ্দিন বকুল,হিলি প্রতিনিধি।।
দিনাজপুরের হিলিতে গতকয়েকদিন ধরে চলা তীব্র তাপদাহের কারনে মানুষের জনজীবন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত গরমের কারনে কাজ করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন নিন্ম আয়ের খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষজন। এদিকে গরমে মানুষজন তেমন বাহির না হওয়ায় যাত্রি কমে আয় রোজগার কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ভ্যান রিক্সা চালকরা। গরম থেকে বাচতে পানি ও স্যালাইন পানের পরামর্শ চিকিৎসকদের।
গত একসপ্তাহের বেশী সময়ধরে হিলিতে তীব্র তাপদাহ চলছে। রোদের তীব্রতায় ও অতিরিক্ত গরমের কারনে প্রয়োজন ছাড়া অনেক মানুষজনই ঘর থেকে বাহির হচ্ছেননা যার কারনে সড়কগুলোতে মানুষের চলাচল একেবারেই কমে গেছে। গরম থেকে বাচতে ও একটু বিশ্রামের আশায় গাছের নিচে ছায়ায় বসে থাকতে দেখা গেছে অনেক মানুষজনকে। গরম থেকে বাচতে অনেককে একটু একটু পর পর পানি পান করতে দেখা গেছে।
পথচারী আল আমিন হোসেন বলেন, গত চার পাচ দিন ধরে প্রচন্ড পরিমানে গরম। এত পরিমান গরম যে বাড়ি থেকে বের হওয়া যাচ্ছেনা। আর যদিওবা প্রয়োজনে বের হচ্ছি তাতে করে যে পরিমান তাপমাত্রা এতে করে শরীর ঘেমে যাচ্ছে সারাদিনে কয়েকবার গোছল করতে হচ্ছে আর পোশাক পরিবর্তন করতে হচ্ছে। আমি এই মাত্র বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম দুমিনিট হেটে আসতেই আমার গা ঘেমে পড়ছে শরীরের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে। গরমের কারনে মনে হচ্ছে মাথা ফেটে যাবে আমি স্টোক করবো এই অবস্থা। এখন আমার থেকে যারা বয়স্ক তাদের জন্য আরো কঠিন অবস্থা সবমিলিয়ে এইরকম রুক্ষ পরিবেশে চলাচল করা কঠিন অবস্থা হয়ে দাড়িয়েছে।
বাজার করতে আসা কুরবান আলী বলেন, আমি বাজার করতে এসেছি কিন্তু যে পরিমান রোদ আর গরম তাতে করে এরভিতরে বাজার কি করে করবো এমনিতেই মাথা ঘুরতিছে। খুব গরমের কারনে শরীরটা খুব খারাপ লাগছে, মাথা ঘুরছে, এমন অবস্থা দাড়িয়েছে যে গরমের কারনে মাথা ঘুরে পড়ে যাবো।
ভ্যান চালক সিরাজুল ইসলাম ও মেহের আলী বলেন, হিলিতে গত কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড গরম পড়েছে। এত পরিমান গরম আগে কখনো ছিলনা বা দেখিইনি, সেই গরম পড়েছে এখন। গরমের কারনে আমরা যেমন বাড়ি থেকে বের হতে পারছিনা তারপরেও পেটের দায়ে বের হতে হচ্ছে। কিন্তু বের হয়েও বিপাকে পড়তে হচ্ছে গরমের কারনে মানুষজন তেমন একটা বাড়ি থেকে বের না হওয়ায় সড়কে যাত্রী পাওয়া যাচ্ছেনা। যারাও বের হচ্ছে তারা গরমের কারনে ভ্যান রিক্সায় না উঠে অটোতে চলাচল করছে। যার কারনে আগের তুলনায় আয় ইনকাম আমাদের একেবারে কমে গেছে। আগে যেখানে ৪থেকে ৫শ টাকা আয় হতো এখন সেখানে ৫০ থেকে ১শ টাকা আয় করা দু:সাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। যার কারনে পরিবার পরিজন নিয়ে চলা অসম্ভব ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। এত পরিমান গরম পড়েছে যে কোনরকম করে একটি টিপ মেরে আসে আর দ্বিতীয় টিপ পাওয়া যাচ্ছেনা যেমন তেমনি টিপ মারার জন্য শরীর চলছেনা। যার কারনে গরম থেকে বাচতে ভ্যান রিক্সা রেখে ছায়ায় বসে রেষ্ট নিচ্ছি।
দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে বাতাসে হিমেলিটির পরিমান বেড়ে যাওয়ায় গরমের অনুভুতি বেশী হচ্ছে। গত একসপ্তাহের বেশী সময় ধরে এমন অবস্থা বিরাজ করছে যা আরো দুএকদিন বিরাজ করবে। বর্তমানে তাপমাত্রা ৩৩ থেকে ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। এর পর ১৮/১৯ তারিখের দিকে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, এর পর বর্ষা বিদায় নিবে, ধীরে ধীরে তাপমাত্রা কমে যাবে।
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. হুমায়ন কবির বলেন, গতকয়েকদিন ধরে চলা প্রচন্ড গরমের কারনে বাহিরে যারা খেটে খাওয়া মানুষ রিক্সা ভ্যান চালক যারা রয়েছেন তারা তীব্র গরমের কারনে ঘেমে যাচ্ছেন পানি শুন্যতা দেখা দিচ্ছে এতে করে তাদের হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে।এজন্য আমাদের পরামর্শ যারা রোদের মাঝে কাজ করছেন তাদের বেশী গরম লাগলে পানি ও স্যালাইন পান করবেন শরীরের ঘামগুলো মুছবেন ও বাতাস করবেন তাহলে তারা ভালো থাকবেন।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।