পুরানো এলসির বিপরীতে আগামী সোমবার থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গম আমদানি শুরু হতে পারে
হিলি প্রতিনিধি।।
নতুন করে এলসি গ্রহন ও গম রফতানি বন্ধ রাখলেও ১২ মে পর্যন্ত হওয়া এলসির বিপরীতে গম রফতানির কথা জানালেও এখনো সেসব গম রফতানি শুরু করেনি ভারত। এতে করে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আটদিন ধরে গম আমদানি সম্পুর্নরুপে বন্ধ রয়েছে। আগামী সোমবার থেকে পুরানো এলসির গম রফতানি শুরু হবে বলে ভারতীয় রফতানিকারকরা বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের জানিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার কারনে ভারত অভ্যন্তরে ১হাজার গমবাহী ট্রাক আটকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট।
হিলি স্থলবন্দরের সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট শেরেগুল ইসলাম বলেন, নিজ দেশে গমের মুল্য নিয়ন্ত্রনে রাখতে গত ১৩ মে শুক্রবার গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত। এর ফলে শনিবার সকাল থেকে বন্দর দিয়ে গম আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। যদিও পরে পুর্বের টেন্ডারকৃত গম রফতানি অব্যাহত রাখায় বিকেল থেকে আবারো গম আমদানি শুরু হয়। কয়েকবার বন্ধ করে আবারো চালু করে পুর্বের টেন্ডারের সব গম রফতানি করে ভারত। যার কারনে বর্তমানে পুর্বের টেন্ডারকৃত গম শেষ হওয়ায় বন্দর দিয়ে কয়েকদিন ধরে গম আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে ১২ মে পর্যন্ত হওয়া এলসির বিপরীতে গম রফতানির আশ্বাস দিলেও সেই গম রফতানি করেনি ভারত। এতে করে আমাদের আমদানিকারকদের বেশ সংখ্যক এলসির গম ভারতে আটকা পড়ে যার কারনে আমাদের চরমভাবে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া দীর্ঘদিন ট্রাকে আটকা থাকায় পণ্যের মান নিয়ে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। পণ্য না ঢোকার কারনে পুর্বে ডলারের মুল্য কম থাকলেও দিন দিন ডলারের মুল্য বাড়ছে যার কারনে গমের বিল ছাড়তে আমাদের বাড়তি অর্থ গুনতে হবে। গত ২৩মে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১২ তারিখ পর্যন্ত হওয়া এলসির সুইফট কপি ওই দিনের মধ্যেই ভারতীয় ব্যাংকে গিয়েছে শুধুমাত্র সেসব এলসির গম রফতানির কথা জানিয়েছেন। কিন্তু যেসব এলসি ১২ মে এর মধ্যে হয়েছে কিন্তু সুইফট কপি ওই তারিখের পরে গিয়েছে বা যেসব এলসির এমান্ডমেন্ট হয়েছে সেগুলোর বিপরীতে গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। কিন্তু এর পরেও নানা জটিলতা দেখিয়ে ভারতীয় কাস্টমস সেই গম রফতানি বন্ধ রাখায় বন্দর দিয়ে কোন আমদানি হয়নি। আজ সকালে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন ১২ তারিখ পর্যন্ত হওয়া এলসির সুইফট কপি ভারতে গিয়েছে সেগুলোর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পুর্ন করে আগামী সোমবার থেকে ওইসব গম রফতানি হবে। তবে বাকি এলসিগুলোর বিপরীতে গম রফতানির বিষয়ে কোন সিন্ধান্ত দেননি তারা।
ভারতীয় সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট অনিল সরকার বলেন, ১৩ মে থেকে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বন্দর দিয়ে গম রফতানি বন্ধ রয়েছে। তবে অনুমতি স্বাপেক্ষে পুর্বের টেন্ডারের কিছু রফতানি অব্যাহত ছিল। সেসব গম রফতানি শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন করে অনুমোদন না আসায় গম রফতানি বন্ধ রয়েছে। এছাড়া নিষেধজ্ঞা আরোপের পর থেকে ভারত অভ্যন্তরে প্রায় ১হাজার গমবাহী ট্রাক আটকা পড়ে রয়েছে। তবে সম্প্রতি ভারতের বৈদেশিক বানিজ্য বিষয়ক কতৃপক্ষ ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) ১২ মে এর মধ্যে হওয়া এলসির সুইফট কপি ওই দিনের মধ্যে ভারতে পৌছেছে সেগুলোর গম রফতানির নির্দেশনা দিয়েছে। তারা যাদেরকে আরসি ইস্যু করছে সেই আদেশের আসল কপি কাস্টমসে আসবে তাদের গম রফতানি হবে। ইতোমধ্যেই তারা আরসি ইস্যু শুরু করেছে ইতোমধ্যেই হিলির কয়েকজন রফতানিকারক সেটি পেয়েছে তবে তার কপি এখনো হিলি কাস্টমসে আসেনি। আজকে আর হওয়ার সুযোগ নেই আগামীকাল যেহেতু রোববার সরকারি ছুটি তাই সেদিনো হবেনা। তবে সোমবার সেই কপি আদেশের কপি কাস্টমসে চলে আসলে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে সেদিন বন্দর দিয়ে গম রফতানি শুরু হতে পারে। তবে বাকি এলসিগুলোর বিপরীতে গম রফতানির বিষয়ে আদেশের জন্য রফতানিকারকরা দিল্লিতে যাবেন সেখানে বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে যা ফলাফল আসবে সেই মোতাবেক বাকি এলসিগুলোর বিপরীতে গম রফতানির বিষয়ে সিন্ধান্ত গৃহিত হবে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বন্দর দিয়ে পুর্বে বেশ পরিমানে গম আমদানি হলেও বর্তমানে গম আমদানি সম্পুর্নরুপে বন্ধ রয়েছে। বন্দর দিয়ে সর্বশেষ গত ২০ মে ২টি ট্রাকে ৭৪টন গম আমদানি হয়েছিল এর পর থেকে বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আর কোন গম আমদানি হয়নি। আর গম আমদানি বন্ধ থাকার কারনে সরকার যেমন রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি বন্দর কর্তপক্ষ তাদের দৈনন্দিন আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অপরদিকে বন্দরে কর্মরত শ্রমিকদের আয় কমে যাওয়ায় তারাও বিপাকে পড়েছেন।