তেঁতুলিয়ায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের ভুলে দাখিল পরীক্ষা দিতে পারছে না এক পরীক্ষার্থী

ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড়

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় ফরম ফিলাপে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের ভুলে দাখিল পরীক্ষা দিতে পারছে না সুমাইয়া নামে এক পরীক্ষার্থী। এদিকে মাদরাসার কর্তৃপক্ষের এমন দয়িত্বহীন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানান স্থানীয়রা। শনিবার (২৯ এপ্রিল) পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে এ ঘটনাটি ঘটে।

মাস তিনেক আগে দাখিল পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেছিলেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শিলাইকুঠি বালাবাড়ি দাখিল মাদরাসার ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার। ফরম পূরণের জন্য মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তার কাছে ২৫০০ টাকা আদায় করে। এরপর পরীক্ষার জন্য দিন রাত পড়াশুনা করে প্রস্তুতি নেয় সুমাইয়া। শনিবার (২৯ এপ্রিল) মাদরাসায় প্রবেশপত্র দেয়ার কথা। সেই প্রবেশপত্র আনতে যায় সুমাইয়া। প্রবেশপত্রের জন্য অন্যদের মতো মাদরাসার কর্তৃপক্ষকে ৫০০ টাকাও দেন তিনি। প্রবেশপত্র নিতে গিয়ে দেখেন যে তার নামে কোন প্রবেশপত্রই আসেনি। পরে জানতে পারেন তার ফরম পূরণই করেনি মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। তার বদলে ভুল করে দুই বছর আগে বিয়ে হয়ে লেখাপড়া থেকে ছিটকে পড়া সুরাইয়া নামের এক ছাত্রীর ফরম পূরণ করে দিয়েছেন তারা।

ওই ছাত্রীর বড় বোন মোর্শেদা আক্তার বলেন, মাদরাসায় গিয়ে প্রবেশপত্র আনতে গিয়ে যখন আমার বোন জানতে পারে যে তার ফরম পূরণই হয়নি তারপর থেকে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এখন সে যদি কোন অঘটন ঘটিয়ে ফেলে এর দায় কে নেবে? যে টাকা দিয়েছে তার ফরম পূরণ না করে তারা যে লেখাপড়া বাদ দিয়েছে তার ফরম পূরণ করে দিয়েছে। কয়েক মাস আগে ফরম পূরণ হয়েছে। তখনও তারা নিজেদের ভুল ধরতে পারেনি। আর প্রবেশপত্র আসার পরেও তারা টাকা নেয়ার জন্য তা খুলে দেখেনি। এখন আমার বোন যদি পরীক্ষা দিতে না পারে এর দায় কে নিবে?

মাদরাসার সুপার বদরুল আলম সরকার বলেন, সুমাইয়ার পরিবর্তে ভুলক্রমে সুরাইয়া নামের এক ছাত্রীর ফরম পূরণ হয়ে গেছে। আমরা আজকেই বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। দেখি কি করা যায়। তবে এই ভুলের দায়ভার কার এমন প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি এই প্রতিষ্ঠান প্রধান।

এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শওকত আলী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এটি প্রতিষ্ঠান প্রধানের গাফিলতি। প্রবেশপত্র এসেছে অন্তত দুই সপ্তাহ আগে। তারা খুলেছে আজ। এই শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে না পারলে এর দায় দায়িত্ব প্রতিষ্ঠান প্রধানের। আমি সুপারকে নির্দেশ দিয়েছি যেভাবেই হোক ওই শিক্ষার্থী যেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।

পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার এক দিন আগে সুমাইয়া প্রবেশপত্র আনতে গিয়ে খুজে পাননি প্রবেশপত্র। এতে করে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে সে। শিক্ষার্থী সুমাইয়া বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের সরকারপাড়া এলাকার গোলাম মোস্তফার মেয়ে।

আরো দেখুনঃ