সোনাগাজীতে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে সার্ভার জটিলতায় জনভোগান্তি চরমে

সোনাগাজী, ফেনী প্রতিনিধি।।
ফেনীর সোনাগাজীতে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে সার্ভার জটিলতার অজুহাতে জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে দিনের পর দিন ঘুরছেন সেবা প্রার্থীরা। কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে নোটিস টাঙিয়ে দিয়েছেন।

প্রায় দুই মাস ধরে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিয়ে এ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা। সনদপত্রের সংশোধন কার্যক্রম, জরুরি বিদেশ যাত্রা, পাসপোর্ট তৈরী, চিকিৎসা বা স্কুলে ভর্তির মতো ১৯টি রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা নিতে ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। নতুন করে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করতে এসেও ভোগান্তিতে পড়ছেন মানুষজন।

সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো থেকে জানানো হচ্ছে সার্ভার বন্ধের কারণে এ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন জনগণ। অথচ কখন সার্ভার চালু হবে, কিংবা কবে এ জটিলতা কাটবে তার কোন সদুত্তর দিতে পারছেনা সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

আমিরাবাদ ইউনিয়নের ওমান প্রবাসী ওমর ফারুক রুবেল বলেন, এক মাস পূর্বে তার স্ত্রীর জন্মনিবন্ধন অনলাইন করার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু সার্ভার বন্ধ থাকায় অনলাইনে জন্মনিবন্ধন করা যাচ্ছেনা।

আমিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক হিরণ বলেন, জনগণের চাপ সামলাতে সার্ভার বন্ধের কারণে অনলাইনে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন অনির্দিষ্টকালের কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নোটিস টাঙিয়ে দিয়েছি। এরপরও জনগণের চাপ সামলাতে পারছিনা। আমার উদ্যোক্তা হৃদয় জানিয়েছেন রাতে দুইটার পরে সার্ভার কিছুটা সচল হয়। গভীর রাতে জেগে থেকে কয়েকটি করলে ফের সার্ভার অচল হয়ে পড়ে। রাত জেগে এভাবে অনলাইনে কাজ করাটা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সার্ভার সচল না হলে আমাদের কিছু করার নেই। সকল ইউনিয়ন পরিষদে একই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা।

বাংলাদেশে ২০০৪ সালে জন্ম নিবন্ধন আইন করা হলেও কার্যকর হয় ২০০৬ সাল থেকে। ২০১০ সালে সার্ভার পরিবর্তন করা হলে দেখা যায়, ২০১০ সালের আগে করা অনেক সনদের তথ্য অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে তাদের আবার নতুন করে অনলাইনে আবেদন করে জন্ম সনদ করাতে হচ্ছে। এছাড়া অনলাইনে নিবন্ধিত অধিকাংশ সনদগুলো রয়েছে ভুলে ভরা। আর এ গুলো সংশোধন করতে গিয়ে পদে পদে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে জনগণকে।

সোনাগাজী সদর ইউপি সচিব আবদুল হালিম বলেন, দিনের বেলায় তো আমরা অনলাইনে ঢুকতেই পারি না, খালি ঘোরে। প্রায় দু’মাস ধরে এ জটিলতায় আমরা হাঁপিয়ে ওঠেছি, জনগণের চাপ সামলাতে পারি না। মানুষজন এসে আমাদের গালাগালি করে, আসলে আমাদের তো কোন দোষ নাই। সার্ভারে যদি আমরা ঢুকতে না পারি, তাহলে কীভাবে কাজ করবো?

নবাবপুর ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল আলম জহির বলেন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে সার্ভার একটি মারাত্মক সমস্যা। এ সমস্যার কারণে জনগণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান বলেন, সার্ভার জটিলতায় কেউ কেউ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, তবে বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। প্রায় সময় সার্ভার ডাউন থাকে। এ সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্টরা কাজ করছে। তবে কবে সমাধান হবে আমার জানা নেই।

এফআর/অননিউজ

আরো দেখুনঃ