সোনারগাঁয়ে দলীয় প্রার্থীর নৌকা ডুবিয়ে, স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নৌকায় তুললেন আওয়ামী লীগের আহবায়ক

সোনারগাঁ ( নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি।।

দলীয় মনোনীত প্রার্থীর নৌকা ডুবিয়ে, জাপা সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নৌকায় উঠানোর অভিযোগ উঠেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়কের বিরুদ্ধে। ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সোনারগাঁ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থীকে পরাজিত করে বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করার অভিযোগ করে গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন নৌকার পরাজিত প্রার্থী আব্দুল বাতেন নৌকাডুবির জন্য দলীয় নেতাদের অভিযুক্ত করেন।

গত বৃহস্পতিবার নৌকাডুবির অন্যতম কারন হিসেবে আহবায়কের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের একটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। আব্দুল বাতেনের অভিযোগের মাত্র একদিন পর গতকাল শনিবার ( ৪ ডিসেম্বর) উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বিজয়ী চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত সদস্য ও সাধারন সদস্যদের উপস্থিতিতে উপজেলা হলরুমে নোয়াগাঁও ইউনিয়নে নৌকাকে পরাজিত করে নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানকে আওয়ামী লীগে যোগদান করিয়েছেন এড. সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া। আওয়ামী লীগে যোগদানকারী নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান সামসুল আলম সামসু জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি। জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ না করেই তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন বলে জানা যায়।

নৌকার পরাজিত প্রার্থী আব্দুল বাতেন অভিযোগ করে বলেন, শামসুল ইসলাম ভুঁইয়ার দুনীর্তি ও দুরভিসন্ধীর কারনে আমি পরাজিত হয়েছি। আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাদের অসহযোগিতা এবং বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার কারনে সোনারগাঁ উপজেলা নোয়াগাঁও ইউনিয়নে আমি পরাজিত হয়েছি। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার প্রার্থনা করে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া দিনে নৌকার পক্ষে থাকলেও রাতে বিদ্রোহী প্রার্থী ইউসুফ দেওয়ানের পক্ষে কাজ করেছেন। তাঁর আপন ছোট ভাই ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক সফিকুল ইসলাম, তার ছেলে ঝলক বিদ্রোহী প্রার্থী ইউসুফ দেওয়ানের পক্ষে কাজ করেছেন তাঁর আপন ভাতিজা মনিরুজ্জামানকে নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী করায় ঐ কেন্দ্রে নৌকা পেয়েছে মাত্র ১৫১ ভোট। এছাড়াও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল্লাহ্ সরকার ও যুবলীগের ইউনিয়ন সভাপতির কেন্দ্রে নৌকা পেয়েছে মাত্র ২৩৬ ভোট। এ দু কেন্দ্রে মাত্র ৩৮৭ ভোট নৌকার পরাজয় নিশ্চিত করে।

এদিকে সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ মাটিচাপা দিতেই দলে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকা সত্ত্বেও তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমান করতে জাতীয় পার্টির নির্বাচিত চেয়ারম্যানকে আওয়ামী লীগে যোগদান করিছেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। সোনারগাঁ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের নির্বাচিত সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির নেতাকে আও য়ামী লীগে যোগদান করানোয় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আজকের যোগদান অনুষ্ঠান দেখে নৌকাডুবিকে পরিকল্পিত বলে মনে করছেন।

এ ব্যাপারে নোয়াগাঁও ইউনিয়নে নৌকা প্রতিকের পরাজিত প্রার্থী আব্দুল বাতেন বলেন, নৌকার পরাজয়ে দলীয় নেতাদের ভুমিকা তুলে ধরায় আমি নানামুখী চাপের মধ্যে আছি। তবে তৃণমূল ও ত্যাগী নেতাদের চোখের জলে নদী বানিয়ে সেই নদীতে দলীয় নৌকায় উঠে অনুপ্রবেশকারীরা উৎসব করবে এটা মেনে নেয়া আমাদের জন্য খুবই যন্ত্রনার।

নোয়াগাঁও ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান সামসুল আলম সামসু আওয়ামী লীগে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, আওয়ামী লীগে যোগদানের ব্যাপারে কোন বাঁধা নিষেধ নাই।

আরো দেখুনঃ