বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক বাহরাইনে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সংবর্ধনা
সাহিন সিকদার, বাহরাইন।
গত ০৭ মে ২০২৩ তারিখে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও আনন্দ মুখর পরিবেশে বাহরাইনের দ্যা ডিপ্লোম্যাট রেডিসন হোটেলে বাংলাদেশ দূতাবাস মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ৫২তম বার্ষিকী উদযাপন করে। কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান এ. কে. এম. মহিউদ্দিন কায়েসের সঞ্চালনায় এবং মান্যবর রাষ্ট্রদূত ড. মুহাম্মদ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাহরাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি ফর পলিটিকাল অ্যাফেয়ার্স ড. শেখ আব্দুলাহ বিন আহমেদ বিন আব্দুল্লাহ আল খালিফা। এছাড়াও বাহরাইন কাউন্সিল অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের ডেপুটি স্পিকার আহমেদ আব্দুল ওয়াহেদ কারাথা, শুরা কাউন্সিল এবং কাউন্সিল অফ রিপ্রেজেন্টেটিভের সদস্যবৃন্দ, রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিকবর্গ, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, বাহরাইন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বাহরাইনি ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, বাংলাদেশ স্কুল বাহরাইনের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী বৃন্দ, বাহরাইনে বসবাসরত বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ সহ দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানটি পাঁচটি পর্বে বিভক্ত করা হয়। বাংলাদেশ ও বাহরাইনের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশ-বাহরাইন সম্পর্কের উপর আলোচনা, তৃতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চতুর্থ পর্বে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কেক কাটা এবং সবশেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য নৈশভোজের আয়োজন রাখা হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে মান্যবর রাষ্ট্রদূত ড. মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম তার স্বাগত বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা শাহাদাত বরণ করেছেন সে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বিশেষভাবে বাহরাইনের মহামহিম বাদশাহ শেখ হামাদ বিন ঈসা আল খালিফা এবং ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী শেখ সালমান বিন হামাদ আল খালিফার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত ড. ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী ৫২ বছরে বাংলাদেশ আজ অর্ধ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনোমির সুখ্যতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে শীর্ষ সেনা অবদানকারী দেশ গুলির মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশের অনেকগুলি মেগা প্রকল্পের মধ্যে ইতোমধ্যে ৬.১৫ কি:মি: দীর্ঘ পদ্মা সেতু যা বাংলাদেশ সম্পূর্ণ নিজ অর্থায়নে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এরকম আরো বিভিন্ন প্রস্তাবিত/বাস্তবায়িত প্রকল্পের কাজ চলমান আছে ।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ত্বাধীন বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই বাংলাদেশ এবং বাহরাইনের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। এ প্রেক্ষিতে তিনি বাংলাদেশের রূপকল্প ২০৪১-এ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ভাতৃপ্রতীম বাহরাইনের সর্বোপরি সহযোগিতার কামনা করেন এবং একইভাবে বাহরাইনের অর্থনৈতিক ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়িত করতে বাংলাদেশের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে মর্মে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ড. শেখ আব্দুলাহ বিন আহমেদ বিন আব্দুল্লাহ আল খালিফা তার বক্তব্যের শুরুতেই মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে তাকে আমন্ত্রণের জন্য মান্যবর রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান। তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ও বাহরাইনের মধ্যকার দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন এবং ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক আরো সুসংহত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্বে রাষ্ট্রদূত ড. ইসলাম অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এবং আগত অতিথিদের সাথে নিয়ে দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন যেখানে বাংলাদেশ স্কুল বাহরাইন এর শিক্ষার্থীরা তিনটি দেশীয় গানের সাথে মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করে।
অনুষ্ঠানের চতুর্থ পর্বে রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য আগত অতিথিদের সাথে নিয়ে কেক কেটে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের বিশেষ এই মুহূর্তটি উদযাপন করেন।
পরিশেষে রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদেরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান এবং উপস্থিত সকলকে নৈশভোজের আমন্ত্রনের মধ্য দিয়ে উক্ত অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়