পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় কালভার্টের মুখ বন্ধ করে ঘর নির্মাণ, পানিতে তলিয়ে গেলো ফসলী জমি

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় একটি কালভার্টের মুখ বন্ধ করে ঘর নির্মাণ করায় পানিতে তলিয়ে গেছে একটি গ্রামের ৬’শত বিঘা ফসলী জমি। অন্যদিকে কালভার্টটি বন্ধ করে দেয়ায় একমুখী পানির চাপে হাফ কিলোমিটার দূরে থাকা ১টি সেতুসহ ২টি পুরাতন কালভার্ট প্রায় ভেঙ্গে পড়ে যাওয়ার পথে। স্থানীয় ভাবে কোন সমাধান না পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক বরাবর গণস্বাক্ষরিত অভিযোগ করেছে ওই গ্রামের ২’শত কৃষক পরিবার।


ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের কালদাসপাড়া গ্রামে। সরেজমিনে শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ওই গ্রাম ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কালদাসপাড়া গ্রাম রাস্তা সংলঘ্ন কালদাসপাড়া ডাঙ্গী বস্তি পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ৪০-৫০ বছর পূর্বে রাস্তার পশ্চিমাংশে সরকারিভাবে একটি সেতু/কালভার্ট করা হয়। কালভার্টটি প্রায় ৫০০-৬০০ বিঘা জমির ফসল ফলানোর সুবিধার্থে নির্মিত ছিল। এতে পানি সঞ্চালন ও নিষ্কাশনের সু- ব্যবস্থাসহ ফসল ফলানো সম্ভব ছিল। কৃষি করে এই জমির উপর ১৮০ থেকে ২০০ পরিবারের নির্ভরশীল। এমতাবস্থায় হঠাৎ করে আবু বক্করের ছেলে আমির হামজা কালভার্ট এর পশ্চিমাংশে ইটের হাফ দালান উপরে টিন সেট দিয়ে মুরগির খামার তৈরিতে ঘর করে কালভার্টটির মুখ বন্ধ করে দেয়। এতে জমির ফসল ফলানো একেবারেই অসম্ভব হয়ে পরেছে। এলাকাবাসী বিষয়টি আমির হাজমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে উল্টাপাল্টা কথা বলা শুরু করে। একই সাথে বিষয়টি সমাধানে একাধীক বার বলা হলে সে স্থানীয়দের বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান করে। কোন সমাধান না পেয়ে স্থানীয় ওই পরিবারের লোকেরা গত ১১ আগস্ট গণস্বাক্ষরিত এক অভিযোগ জেলা প্রশাসক বলাবর দাখিল করে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আমির হামজা বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে জানান, আমি আমার জমিতে ঘর তুলেছি। পাশে আমার বাড়ি। আমার বাড়ির জমি ক্ষতি হওয়ায় ঘরটি নির্মাণ করেছি।

স্থানীয় নুর মোহাম্মদ, মকবুল হোসেন সহ স্থানীয়রা জানান, আমির হাজমা কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দেয়ায় আমাদের এলাকাবাসীর প্রায় ৬০০ বিঘা ফসলী জমিসহ ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। সকালেই আমরা কালভার্টটির মুখ খুলে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান করছে আমির হামজা। আমরা স্থানীয় হিসেবে জমিসহ ফসল রোক্ষায় প্রশাসনের মাধ্যমে কালভার্টটির মুখ খুলে দেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

মামুন নামে আরেকজন অভিযোগ করে বলেন, ফসলী জমির ওই কালভার্টটি প্রধান মুখ। কিন্তু সেটির মুখ বন্ধ করে দেয়ায় ফসল তো পানিতে তলিয়ে গেছে, একই সাথে একটি সেতু, পাশে থাকা ২টি কালভার্ট ভেঙ্গেপড়ার উপক্রম। আমরা প্রশাসনের মাধ্যমে দ্রুত সেই কালভার্টটির মুখ খেলে পানি যাওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করছি।

এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্মা (ওসি) আবু সায়েম মিয়া জানান, অভিযোগের বিষটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে ঘুরে দেখেছি। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এদিকে কালভার্টের মুখ মালিকানা জমির মধ্যে পড়ে যাওয়ায় একটু সমস্যা হয়েছে। দুইপক্ষের লোক বিষয়টি সমাধানে একত্রে বসলে আশা করি দ্রুত সমাধান হবে।

জেনিফার________৪ সেপ্টেম্বর ২১

আরো দেখুনঃ