একদিনেই হিলি স্থলবন্দর দিয়ে এলো ২হাজার টন পেয়াজ দাম কমলো কেজিতে ২/৩টাকা
হিলি প্রতিনিধি।।
পবিত্র শবেবরাত ও তিন দিন পেয়াজ আমদানি বন্ধে বাড়তি চাহীদার কথা মাথায় রেখে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেয়াজের আমদানি বাড়িয়েছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। এতে করে একদিনেই বন্দর দিয়ে সর্বচ্চো ৭৭টি ট্রাকে ২হাজার ১৭৬টন পেয়াজ আমদানি হয়েছে। এতে একদিনেই বন্দরে পাইকাড়িতে পেয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ২/৩টাকা করে। একদিন আগেও প্রতিকেজি পেয়াজ প্রকারভেদে ২০টাকা থেকে ২৬টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ১৮টাকা থেকে ২৩টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেয়াজের দাম কমায় খুশি বন্দরে পেয়াজ কিনতে পাইকারসহ নিন্ম আয়ের মানুষজন।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে ইন্দোর, নাসিক, গুজরাট, নগর জাতের পেয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। ইন্দোর জাতের পেয়াজ একদিন পুর্বে ২০টাকা বিক্রি হলেও তা থেকে কমে ১৮টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নাসিক গুজরাট নগর জাতের পেয়াজ ২৬টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে ২৩ থেকে ২৪টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে হিলি বাজারে খুচরা বাজারেও কমেছে পেয়াজের দাম।পুর্বে ১৬ থেকে ২০টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ১৪ থেকে ১৬টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
হিলি বাজারে পেয়াজ কিনতে আসা আলম হোসেন বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম যখন উদ্ধমুখি তখন পেয়াজের দামে স্বস্তি ফিরেছে। পেয়াজের দাম মাঝখানে কিছুদিন বাড়তি থাকার পরে আবারো আগের অবস্থায় এসেছে। দুদিন আগেও বাজার থেকে ১৬ থেকে ২০টাকা কেজি দরে পেয়াজ ক্রয় করেছি। শবেবরাত উপলক্ষ্যে আজ পেয়াজ কিনতে এসে সেই পেয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ১৪ থেকে ১৬টাকা কেজি দরে। এতে করে আমাদের মতো নিন্ম আয়ের মানুষদের বেশ সুবিধা হয়েছে। সামনে যেহেতু রমজান দাম যদি এমন থাকে তাহলে আমাদের জন্য সুবিধা হয়।
হিলি বাজারের পেয়াজ বিক্রেতা শাকিল খান বলেন, বন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমানে পেয়াজ আমদানির ফলে বাজারে পেয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। যার কারনে প্রতিদিনই পেয়াজের দাম কমছে এতে করে আমাদের লোকশান গুনতে হচ্ছে।আমরা যে দামে ক্রয় করে নিয়ে এসে বিক্রি করছি সব বিক্রি না হতেই বাজার কমে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিকেজি পেয়াজ ১৪থেকে ১৬টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তারপরেও যে একটা শবেবরাতের বাজার বাজারে সেভাবে ক্রেতা নেই যার কারনে যে দাম বলছে কমবেশী করে পেয়াজ বিক্রি করছি।
হিলি স্থলবন্দরে পেয়াজ কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, দেশীয় পেয়াজের সরবরাহ কমের কারনে চাহীদা থাকায় আমরা গতকয়েকদিন ধরেই হিলি স্থলবন্দর থেকে পেয়াজ ক্রয় করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে আসছি। তবে আগের তুলনায় এখন আমাদের পেয়াজ কিনতে সুবিধা হচ্ছে। বন্দর দিয়ে পেয়াজের আমদানি বাড়ার কারনে দাম আগের তুলনায় কমেছে যার কারনে পুর্বে আমাদের পেয়াজ কিনতে যে পুজি লাগতো এখন সেই টাকা দিয়ে আরো বেশী পরিমান পেয়াজ কিনতে পারছি। এছাড়াও আমরা যেমন কম দামে পেয়াজ কিনতে পারছি তেমনি আমরা মোকামগুলোতে কম দামে বিক্রি করছে তাতে করে দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষজন কম দামে পেয়াজ খেতে পারছে। বন্দর দিয়ে পেয়াজের আমদানি যদি এমন থাকে ও দাম কম থাকে তাহলে আমরা যেমন চাহীদামতো কিনতে পারবো তেমনি বিক্রি করতে সুবিধা হবে।
হিলি স্থলবন্দরের পেয়াজ ব্যবসায়ী স্বপন মুন্সি বলেন, বৃহস্পতিবার শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি ও মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষ্যে টানা তিনদিন হিলিসহ দেশের সবগুলো বন্দর দিয়ে আমদানি রফতানি বন্ধ থাকবে। এসময় বন্দরগুলো দিয়ে অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি কোন ধরনের পেয়াজ আমদানি হবেনা। এসময় দেশের বাজারে পেয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ও শবেবরাত উপলক্ষ্যে দেশে পেয়াজের বাড়তি চাহীদার কথা মাথায় রেখে বন্দর দিয়ে পেয়াজের আমদানি বাড়িয়ে দিয়েছেন আমদানি কারকরা। একদিনেই বন্দর দিয়ে রেকর্ড সংখ্যক পেয়াজ আমদানি হয়েছে এতে করে সরবরাহ বাড়ায় পেয়াজের দাম আরো কমেছে।এছাড়া গত কয়েকদিন থেকে পেয়াজের দাম কম থাকায় মানুষজন শবেবরাতের জন্য আগে থেকেই পেয়াজ ক্রয় করে ফেলেছেন যার কারনে মোকামগুলোতে যেভাবে পেয়াজের চাহীদা হওয়ার কথা সেভাবে নেই। অপরদিকে বন্দর দিয়ে বাড়তি পরিমানে পেয়াজ আমদানির কারনে সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতির দিকে রয়েছে। যে হারে পেয়াজ আমদানি হচ্ছে তাতে করে সামনে রমজানে পেয়াজের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন,বন্দর দিয়ে পেয়াজের আমদানি পুর্বের চেয়ে দিন দিন বাড়ছে। তবে এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বচ্চো গতকাল একদিনেই ৭৭টি ট্রাকে ২হাজার ১৭৬টন পেয়াজ আমদানি হয়েছে। এসব পেয়াজ যাতে কাস্টমসের সকল প্রক্রিয়া সম্পুর্ন করে দ্রুত আমদানিকারকরা খালাস নিতে পারেন সেজন্য বন্দর কতৃপক্ষ সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। পেয়াজের জন্য আলাদা স্থান যেমন নির্ধারন করে দেওয়া হয়েছে তেমনি পেয়াজের লোডআনলোড করার জন্য একদল দক্ষ শ্রমিক রাখা হয়েছে এই কাজ করার জন্য।