কুষ্টিয়া চাচা হত্যায় ভাতিজার যাবজ্জীবন স্ত্রী হত্যায় স্বামীর যাবজ্জীবন
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি ।।
জমি কেনা নিয়ে বিরোধে চাচাকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে কুষ্টিয়ায় দুই ভাতিজাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদেরকে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার বিকালে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।
অপর দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আসামিকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন।
জানা যায়, চাচা তহির উদ্দিন হত্যার দায়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানার নৃসিংহপুর (রসুনপুর) গ্রামের মহির উদ্দিনের ছেলে ইটাল (৩৬) ও আজম (৩৩)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশ পাহারায় তাদেরকে জেলা কারাগারে নিয়ে যওয়া হয়। আদালত সূত্রে জানা যায়, জমি কেনা নিয়ে বিরোধের জেরে ২০১০ সালের ৩ জুন সকালে ইটাল ও আজম লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটালে গুরুতর আহত হন আপন চাচা তহির উদ্দিন (৫৫)।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে তার মৃত্যু হয়। রাজপাড়া থানা পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। পরদিন নিহতের ছেলে রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে ইবি থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ২০১০ সালের ২৭ অক্টোবর ইবি থানার এসআই সৈয়দ আশিকুর রহমান দন্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। অপর দিকে স্ত্রী হত্যার দায়ে দন্ড প্রাপ্ত আসামি আজিজুল ইসলাম (৩৮) কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের চর বানিয়াপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, আজিজুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিবেশী জেসমিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরস্পর ভালোবেসে ২০১৩ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আপত্তি থাকলেও পরে জেসমিনের পরিবার বিয়ে মেনে নেয়। কিন্তু আজিজুল ইসলামের পরিবার জেসমিনকে মেনে নেয়নি। কিছুদিন পর থেকে আজিজুল ইসলাম জেসমিনের ওপর অত্যাচার শুরু করেন।
সব অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করেও জেসমিন সংসার করতে থাকেন। এ অবস্থায় জেসমিন অন্তঃসত্তা হন। পরে ২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল গভীর রাতে জেসমিন আক্তারকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেন আজিজুল ইসলাম। পরে জেসমিনের বাবা বাদী হয়ে আজিজুল ইসলামসহ তার পরিবারের পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে রোববার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
আয়েশা আক্তার/অননিউজ24