ফটিকছড়ির ১২ ইউপিতে ৭টিতে আ.লীগ, ৫টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়
ফটিকছড়ি(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি।।
অবশেষে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সম্পন্ন হলো ফটিকছড়ির ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। তবে হাইকোর্ট কর্তৃক লেলাং ও বখতপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন স্থগিত করায় এই দুই ইউনিয়নে শুধু মেম্বার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্য ১২ ইউনিয়নের মধ্যে সাতটিতে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী, পাঁচটিতে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ১৪টি ইউনিয়নের ১২৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোট চলাকালীন বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে লেলাংয়ে ইউপির ৮ নং ওয়ার্ডের গোপালঘাটা এম.আর.সি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ছুরিকাঘাতে মো. শফি (৫০) নামে এক ব্যক্তির প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। দিনব্যাপী নানা বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্যদিয়ে ১৪টি ইউনিয়নে বিকাল ৪টায় ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। ভোট গণনা শেষে রাতে উপজেলা পরিষদের জহুরুল হক হলে ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসারগণ।
এরমধ্যে বাগানবাজার ইউনিয়নে ৯ হাজার ৯ শত ৯৭ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন সাজু; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী নৌকার প্রার্থী রুস্তমআলী পেয়েছেন ৬ হাজার ৫শত ৯৪ ভোট। দাঁতমারা ইউনিয়নে ১০ হাজার ৯ শত ৮৩ ভোট পেয়ে নৌকার প্রার্থী জানে আলম টানা ৩য় বারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল আলম পেয়েছেন ৯ হাজার ৫ শত ৯১ ভোট। নারায়ণহাটে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু জাফর মাহামুদ ৮ হাজার ৫ শত ৭৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী নৌকার প্রার্থী হারুনুর রশীদ পেয়েছেন ৬ হাজার ৯ শত ৬২ ভোট।
হারুয়ালছড়িতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইকবাল হোসেন চৌধুরী ৭ হাজার ৩ শত ৯২ ভোট পেয়ে টানা তৃতীয় দফায় চেয়ারম্যান হয়েছেন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী নৌকার প্রার্থী জুলফিকার আলী ভুট্টো পেয়েছেন ৪ হাজার ৯ শত ৬ ভোট। পাইন্দং ইউনিয়নে ৪হাজার ৫ শত ৮১ ভোট পেয়ে টানা তিন দফায় বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএম ছরোয়ার হোসেন স্বপন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী নৌকার প্রতীকের শাহ আলম সিকদার পেয়েছেন ২ হাজার ৬ শত ৪৩ ভোট। কাঞ্চননগরে নৌকা প্রতীকের কাজী দিদারুল আলম ৬ হাজার ৯ শত ৫০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী রশীদ উদ্দীন চৌধুরী কাতেব পেয়েছেন ৫ হাজার ৮ শত ৮৭ ভোট।
সুন্দরপুরে নৌকার প্রার্থী শাহনেওয়াজ চৌধুরী ৭ হাজার ৮ শত ৩৬ ভোট পেয়ে টানা দ্বিতীয় দফায় বিজয়ী হয়েছেন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী শহীদুল আজম পেয়েছেন ৪ হাজার ১ শত ৪২ ভোট। রোসাংগীরিতে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী শোয়েব আল সালেহীন ৪ হাজার ৪ শত ১৫ ভোট পেয়ে টানা ২য় বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন; তাঁর নিকট প্রতিদ্ব›দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী তারেক নেওয়াজ পলাশ পেয়েছেন ১ হাজার ৬ শত ৩৮ ভোট।
ধর্মপুরে নৌকার প্রার্থী কাজী মাহমুদুল হক ৯হাজার ৮শত ৮৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোরশেদুল আলম পেয়েছেন ১শত ৪০ ভোট। জাফতনগরে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়া উদ্দিন জিয়া ৩হাজার ৬শত ৮৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী নৌকা প্রতীকের আব্দুল হালিম পেয়েছেন ১হাজার ৯শত ৫০ভোট। সমিতিরহাটে ৭ হাজার ৩২ ভোট পেয়ে টানা ২য় দফায় বিজয়ী হয়েছেন নৌকার প্রার্থী হারুন অর রশিদ ইমন; তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী নাছির উদ্দীন পেয়েছেন ১ হাজার ৮ শত ১২ ভোট। আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান অহিদুল আলম জুয়েল।
অন্যদিকে লেলাং ও বখতপুর ইউনিয়নে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর রিট আপিল জটিলতায় চেয়ারম্যান পদে ৬ সপ্তাহের জন্য নির্বাচন স্থগিত রেখেছেন হাইকোর্ট। তাই সেখানে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।