দেবিদ্বারে নৌকা-ঈগলের কথার লড়াই, জাতীয় পার্টির অভিযোগ

আল-আমিন কিবরিয়া, দেবিদ্বার।।

প্রতীক বরাদ্দের পরই সরগরম হয়ে উঠেছে কুমিল্লা-৪ আসনের নির্বাচনী মাঠ। দিন-রাত এক করে যেমন প্রচার প্রচারণা চলছে, তেমনি চলছে প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে কথার লড়াই। প্রতিটি এলাকা ছেয়ে গেছে ব্যানার-পোস্টারে। এই আসনে মোট বারোজন প্রার্থী হলেও মাঠে সরব তিনজন।

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। দ্বিতীয় বারের মতো তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তাঁর বিপরীতে ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ। এদিকে এই আসনে আছে জাতীয় পার্টির নতুন মুখ। এবার এই আসনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইউসুফ আজগর।
দেবিদ্বার উপজেলা শহরেই কথা হয়েছে বিভিন্ন পেশার অন্তত ১৫ জন ভোটারের সাথে। ফিরোজ আহমেদ তাঁদের একজন। এই ভোটার মনে করেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাজী ফখরুল এবং একই দলের স্বতন্ত্র আবুল কালামের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্ধিতা হবে। আলোচনা আছেন লাঙ্গলের প্রার্থী ইউসুফ আজগর। ফিরোজ আহমেদ ছাড়া অন্যান্যরা জানায় বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নির্বাচন বর্জনের পর প্রতিদ্বন্ধিতাহীন ভোটের শঙ্কা ছিল তাঁদের। তবে শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে একাধিক প্রার্থীর সরব উপস্থিতি, প্রার্থীদের মধ্যে কথার লড়াই এবং জোর প্রচারণার ফলে দেবিদ্বারে নির্বাচন জমে উঠেছে। প্রচারণা শেষে কেন্দ্রে ভোটার নিয়ে যাওয়াটাই হবে প্রার্থীদের জন্য বড় পরীক্ষা।

সম্প্রতি এক উঠান বৈঠক রাজী মোহাম্মদ ফখরুল বলেছেন, অনেকেই নাকি বলে, আমি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল উন্নয়ন করিনি তাহলে উন্নয়ন করলটা কে ? এই যে নতুন রাস্ত দিয়ে হেটে এসেছেন এটা করল কে ? এই প্যান্ডেলের পিছনে যে চারতলা ভবনটা তা করল কে ? যে কাঁচা রাস্তগুলো পাকা হয়েছে তা করল কে ? যারা বলছে উন্নয় হয়নি, তারা কি করেছে ? দেবিদ্বারে এমন কোন গ্রাম নেই যেখানে উন্নয়ন হয়নি। যদি ভবন না হয়ে থাকে রাস্তা হয়েছে, রাস্ত না হয়ে থাকলে কালর্ভাট, ব্রীজ হয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদও এক উঠান বৈঠকে বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হবে। সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে এই নির্বাচনে দিকে। যদি কেউ স্বপ্ন দেখে ভোট কেটে বাক্স ভরে ফেলবে, এটি তাদের দুঃস্বপ্ন ছাড়া কিছুই না। জনগণ যাকে চাইবে, জনপ্রিয়তা যার বেশি ভোটে তিনিই নির্বাচিত হবেন। ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। তাঁরা গুজব ছড়াবে। হুমকি ধামকি দিবে। এসবে কিছুই হবে না। চারদিকে ঈগলের জোয়ার নেমেছে। এই জোয়ারে সকল অপশক্তি হারিয়ে যাবে।

জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ইউসুফ আজগর জানায়, দেবিদ্বারে যেই দুইজন প্রার্থী আছেন তারা দুজন একই দলের। জনগণ এবার পরিবর্তন চায়। জনগণ যদি ভোট দেওয়ার সুযোগ পায় এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। তাহলে আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। বিগত ১০-১৫ বছরে দেবিদ্বারে উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন হয়নি। উপজেলার সব রাস্তা-ঘাটই ভাঙা-চুড়া। অনেক রাস্তাা চলচলের অনুপযোগী। গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন জায়াগায আমার পোস্টার ছিরে ফেলে দিয়েছে। এটা নিয়ে আ সংকিত।

দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় মোট ভোটার আছে ৩ লক্ষ ৭৪ হাজার ৫২৬জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১লক্ষ ৯৪ হাজার ২৭৬ এবং নারী ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ৮০ হাজার ২৫০জন। মোট ভোট কেন্দ্র ১১৪ টি।

এফআর/অননিউজ

আরো দেখুনঃ